মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ অক্টোবর: এ যেন “অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো!” ২০০৮ থেকে ২০১০। ভয়াবহ মাও আতঙ্কের সেই দিনগুলিতে গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজোও প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। সন্ধ্যার আগেই নামত অন্ধকার! বাড়ি থেকে বেরোনোটাই কার্যত দুঃসাহসের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর অবশ্য পরিস্থিতিরও ‘পরিবর্তন’ হয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন। ২০১৮ সালের পর জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের সেই মাও ‘আঁতুড়ঘর’ পিড়াকাটাতে দুর্গাপুজোর সংখ্যাও ‘এক’ থেকে ‘দুই’ হয়েছে। সর্বজনীন দুর্গাপুজো ছাড়াও বাজার কমিটির সদস্যদের উদ্যোগে ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হচ্ছে পিড়াকাটা বাজার দুর্গোৎসব কমিটির পুজো। প্রথম বছরই শালবনী ব্লকের সেরা পুজোর শিরোপা পেয়েছিল এই পুজো। ২০২৩ সালে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানেও ভূষিত হয়েছে। গত বছর মণ্ডপ হয়েছিল রোমের ভ্যাটিকান সিটির আদলে। প্রতিমাও হয়েছিল নজরকাড়া। পুজোর বাজেট ছিল প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। এবার পুজোর বাজেট আরও বেড়েছে। শিফন সুতো দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রতিমা। মণ্ডপ হয়েছে রাজস্থানের জয়পুরের অ্যালবার্ট হল মিউজিয়ামের আদলে।

thebengalpost.net
পিড়াকাটার মণ্ডপ (অ্যালবার্ট হল মিউজিয়ামের আদলে):

thebengalpost.net
শিফন সুতোর প্রতিমা:

জঙ্গলমহল পিড়াকাটার পিড়াকাটা বাজার দুর্গোৎসব কমিটির ৭ম বর্ষের পুজোয় এবার মোট বাজেট প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন কমিটির তরফে পরিমল ধল, গৌতম দাস, প্রবীর সাউ, শমিত দাসরা। মহালয়ার দিনই ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, চতুর্থীর দিন বিকেলে পুজোর আনুষ্ঠানিক সূচনা উপলক্ষে উপস্থিত থাকার কথা সাংসদ জুন মালিয়া, বিডিও রোমান মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ প্রমুখের। পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পুজো উপলক্ষে ষষ্ঠীর দিন রক্তদান শিবির ও বস্ত্রদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বরাবরের মতো। এছাড়াও, ষষ্ঠী থেকে দশমী অবধি নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত এবারও। নবমীর দিন প্রায় ১০ হাজার মানুষের জন্য অন্নভোগের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবছরই অন্নভোগ গ্রহণ এবং পুজো উপভোগ করার জন্য আশেপাশের একাধিক গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন পিড়াকাটাতে। এবারও যে তার ব্যতিক্রম হবেনা, তা জানিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্যরা।

thebengalpost.net
দিনের আলোয় মণ্ডপ: