দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৬ ডিসেম্বর: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া (1st SLST, 2016) চলাকালীন-ই একটি অডিও ভাইরাল হয়েছিল! যেখানে ওয়েটিং লিস্টে থাকা একজন বৈধ চাকরিপ্রার্থীর উদ্দেশ্যে এক চাকরির ‘দালাল’ বা মধ্যস্থতাকারীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “সাদা খাতা জমা দেওয়ার মজাই আলাদা!” এবার, সত্যি সত্যিই সেই সমস্ত ‘মহান’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘সাদা খাতা’ প্রকাশ্যে এলো। সৌজন্যে অবশ্যই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর, এই মুহূর্তে সেই সমস্ত ব্ল্যাংক ওএমআর (Blank OMR) ঘিরে নেটদুনিয়া উত্তাল! লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছেন এতোদিনে যাঁরা বিভিন্ন কারণে কলকাতা হাইকোর্ট তথা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নানা রায়ের সমালোচনা করছিলেন! আজ, মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর দেওয়া নির্দেশের প্রেক্ষিতেই সন্ধ্যা নাগাদ স্কুল সার্ভিস কমিশন ৪০-টি ওএমআর সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম ও রোল নম্বরের তালিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কেউ বা পুরো ওএমআর সিট-ই ফাঁকা রেখে দিয়েছেন; কেউ আবার ১ টি বা দু’টি পূরণ করেছেন; আবার কেউ ৭-৮ টি পূরণ করেছেন। দু’একজন অবশ্য সবকটি পূরণ করছেন। কিন্তু, তাঁদের ক্ষেত্রেও নম্বরে কারচুপি করা হয়েছে বলে সিবিআই আধিকারিকরা তদন্ত করে দেখেছেন!
প্রসঙ্গত, গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্কে থাকা স্ক্যান কপি এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের সিস্টেমে থাকা ডিজিটাইজড কপির মধ্যে নম্বরের বিস্তর ফারাক খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাড়াও গ্রুপ সি-ডি মিলিয়ে এরকম শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার বলে গতকালই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু’র বেঞ্চে জানিয়েছিলেন সিট প্রধান অশ্বিন শেনভি। তাঁদের সকলেরই ওএমআর (OMR) কারচুপি করে নম্বর বাড়ানো হয়েছে বলেও সিট প্রধান জানিয়েছিলেন সোমবার। মঙ্গলবার এরকমই ৪০-টি ‘নমুনা ওএমআর’ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে ২০ জন ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন এবং ২০ জন ওয়েটিং তালিকায় আছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে, একজন প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া গেছে, যিনি আবার ওএমআর শিটে নিজের ‘রোল নম্বর’ টাও ঠিকঠাক পূরণ করতে পারেননি! আর, এই সমস্ত শিক্ষকদের তালিকা আর ওএমআর দেখে রাজ্যের শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকদের চোখ কপালে উঠে গেছে একপ্রকার!