দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর: কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহাকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, পটাশপুর, ভগবানপুর প্রভৃতি এলাকাও। ফাটল দেখা দিয়েছে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী’র একাধিক নদীবাঁধে! গ্রামের পর গ্রাম এখনও জলের তলায়। আরও বড় বিপর্যয়ের প্রহর গুনছেন লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষ। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বন্যা দুর্গত প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। এর মধ্যে, খড়্গপুর মহকুমার সবং-ডেবরা-পিংলা-বেলদা-নারায়ণগড় এলাকাতেই প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ বন্যা দুর্গত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে এন.ডি.আর.এফ। প্রায় ১ লক্ষ মানুষ-কে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নিয়ে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া ফের একবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। একই অভিযোগ সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রেরও। বিরোধী দলের অভিযোগ, “প্রতি বছর নদী বাঁধ সংস্কারের জন্য যে টাকা বরাদ্দ হয়, তা কোথায় গেল! এত দুর্বল নদী বাঁধ কেন? বালির বাঁধে আর কতদিন?” যদিও মন্ত্রীদের বক্তব্য, “গত ১২-১৩ বছর পর এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সত্যিই এবার কেলেঘাই-কপালেশ্বরী’র সংস্কার প্রয়োজন!” কিন্তু, কবে? সেই উত্তর নেই কারুর কাছেই। তারমধ্যেই, আরও তিনটি প্রাণ তলিয়ে গেল বন্যার প্রকোপে! দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে সবংয়ে এবং এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বেলদা এলাকায়।

thebengalpost.net
উদ্ধার কার্যে NDRF :

thebengalpost.net
প্লাবিত সবংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা :

জানা গেছে, সবংয়ের ৫ নং সারতা অঞ্চলের বনাই গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধা রাজবালা কর -এর মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। গতকাল রাতে নিজের মাটির ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন রাজবালা। গভীর রাতে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর! স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে উদ্ধার করলেও, ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে রাজবালার। অন্যদিকে, জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ নং অঞ্চলের নন্দপুরার মেনকা সিঙ্গিয়া নামে ৪৫ বছর বয়সী এক মহিলা’র। দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে, বন্যার জলে ভেসে যাওয়া এক ব্যক্তির মৃতদেহ বাঘুই খাল থেকে উদ্ধার করল বেলদা থানার পুলিস। বন্যাকবলিত নারায়ণগড় ব্লকের বেলদা থানার খাকুড়দা সংলগ্ন হেমচন্দ্র এলাকার বাসিন্দা কালীপদ মাইতি (৪৫) গতকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার খাকুড়দার বাঘুই খাল থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এর ফলে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বন্যার প্রকোপে মৃত্যু বেড়ে হল- ১০ বা আরও বেশি। শুধু কেলেঘাই কপালেশ্বরী নয়, বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কংসাবতী ও শিলাবতী নদীর জলও। সবমিলিয়ে জেলার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এর মধ্যেই, শনিবার-রবিবার থেকে ফের নতুন একটি নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ফলে, এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে দুই মেদিনীপুরে!

thebengalpost.net
মৃত মেনকা সিঙ্গিয়া (৪৫) :

thebengalpost.net
বালির বাঁধ আর কতদিন? প্রশ্ন এলাকাবাসীর :