দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ১০ মে: এখনও অবধি ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ (Mocha)-র দেখা নেই। তবে, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আজ অর্থাৎ বুধবার (১০ মে) আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরীর সম্ভাবনা আছে। ঘূর্ণিঝড় তৈরী হলে তার নাম হবে মোকা বা মোখা (Mocha)। তবে, বঙ্গোপসাগরের উপর ইতিমধ্যে (মঙ্গলবার) তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অভিকর্তার সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানিয়েছেন, সব ঠিকঠাক চললে বুধবার তা পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। তখন তার নাম হবে ‘মোকা’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিভিন্ন দেশ। যেমন এর আগে বাংলার বুকে আঘাত হানা ‘সিত্রং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। তেমনই ‘মোকা’ (Mocha) নামটি দিয়েছে আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত ইয়েমেন। গোটা বিশ্বে কফি রফতানির জন্য বিখ্যাত ইয়েমেন। তাই, কফি-প্রেমীদের কাছে ‘মোকা’ অত্যন্ত পরিচিত নাম।

thebengalpost.net
শুক্রবার ও শনিবার ঘূর্ণিঝড়ের সামান্য প্রভাব পড়তে পারে পুরী ও দীঘা উপকূলে:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মৌসম ভবন জানিয়েছে, মোকার কারণে আন্দামান সাগর, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব, মধ্য-পশ্চিম এবং মধ্য-পূর্ব অংশের সমুদ্র অশান্ত থাকতে পারে। মঙ্গল থেকে শনিবার এই পরিস্থিতি চলতে পারে। তাই, আন্দামান সাগর উপকূলে মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। এর পর তা উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর এগোবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই পথ ধরেই এগোতে পারে ঘূর্ণিঝড়। শুক্রবার দিক পরিবর্তন করতে পারে ‘মোকা’। বাঁক নিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক বরাবর বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলের দিকে এগোতে পারে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ১১ মে, বৃহস্পতিবার ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিমি। শুক্র এবং শনিবার ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিমি। সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ কিমি। তবে কবে এবং কোথায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি আবহাওয়া দফতর। তবে, উপকূলবর্তী এলাকায় সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। অপরদিকে, আন্দামান উপকূলে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তথা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গত ২-৩ দিন ধরে। আজ, বুধবারও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলী, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, ইত্যাদি জেলাগুলিতে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম জেলায় জারি করা হয়েছে তাপপ্রবাহের ‘কমলা’ সতর্কতা।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা এবং কলকাতা বাদে দক্ষিণের সমস্ত জেলাতে প্রখর রোদ আর প্রচণ্ড তাপে ‘লু’ বওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার (১২ মে) পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই চব্বিশ পরগনায় ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। অবশিষ্ট দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবার ও শনিবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হালকা ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে এখনও অবধি আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। আপাতত, সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন দক্ষিণবঙ্গ বাসী!

thebengalpost.net
তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে জঙ্গলমহল সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়: