দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ ফেব্রুয়ারি: সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীদের জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষা। তার আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পরীক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে ‘বার্তা’ দিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী। শুক্রবার বিকেলে তিনি জানান, জেলায় এবারে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৫২ হাজার ৮৯২। তার মধ্যে ছাত্র ২৪৬৭৬ এবং ছাত্রী ২৮২১৬ জন। গতবছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬২৪। গতবছর পরীক্ষার্থী ছিল ৫১ হাজার ২৬৮। জেলায় এবার সর্বাধিক পরীক্ষার্থী খড়্গপুর মহকুমাতে, ২৪০৭১ জন। মেদিনীপুর ও ঘাটাল মহকুমায় পরীক্ষার্থী যথাক্রমে ১৬৯৭৮ এবং ১১৮৪৩। সুষ্ঠুভাবে যাতে জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয় এবং পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে; সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে শুক্রবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরে নিজের কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী।

জেলাশাসক জানান,
১) জেলায় এবার মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১২২ (গতবছর ছিল ১২৫)। মেন ভেনু ৭৩টি এবং সাব ভেনু ৪৯টি।
২)জেলায় ২টি প্রধান কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। নম্বর হল- 03222-275455 এবং 03222-276582। ৩টি মহকুমায় এবং ২১টি ব্লকের ক্ষেত্রে যথাক্রমে মহকুমাশাসক এবং সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-দের কার্যালয়ের ফোন নম্বরই হল কন্ট্রোল রুমের নম্বর।
৩) হাতির করিডর রয়েছে জঙ্গলমহলের এমন ৬টি স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। বনদপ্তরকে বিশেষ সতর্ক করে, সেই ৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে এবং বাড়ি ফিরতে পরীক্ষার্থীদের যাতে কোন সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে।
৪) জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানোর জন্য বনদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫)প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করবে বনদপ্তর ও পরিবহন দপ্তর।
৬) জেলার বাস পরিবহন সংগঠনগুলি এবারও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন ভাড়া নেবে না। এজন্য বাস পরিবহন সংগঠনগুলিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলাশাসক।
৭)মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার তিনদিন আগে থেকে অর্থাৎ আজ, শুক্রবার থেকে মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৮) পরীক্ষার দিনগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ (বিএনএস এর ১৬৩) ধারা জারি করা হবে।
৯)মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা যাবেনা পরীক্ষার্থী এবং নজর-শিক্ষকদের (ইনভিজিলিটরদের)। সেজন্য স্কুলগুলিতে একটি রুমে মোবাইল রাখার (ক্লক রুম) ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১০) পরীক্ষার্থীরা মোবাইল, স্মার্ট ওয়াচ বা ইলেক্ট্রনিক্স গেজেট নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। অভিভাবকেরা ঢুকতে পারবেন না পরীক্ষা কেন্দ্রে।
১১) প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।
এছাড়াও, ১২) প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে হেলথ টিম থাকবে। অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশেষ রুম থাকবে।
১৩) জেলার প্রতিটি হাসপাতালে পরীক্ষার্থীদের জন্য বেড সংরক্ষণ করে রাখা হবে।
১৪) যানজট রুখতে পরীক্ষার দিনগুলিতে ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
১৫) পরীক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় কন্ট্রোল রুম সহ প্রয়োজনে জেলাশাসককেও ফোন করা যাবে। দ্রুত সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক। অপরদিকে, বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার দিনগুলিতে জঙ্গলপথে তথা জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকাগুলির রাস্তাতে বনকর্মীরা যে কোন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য গাড়ি নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। সঙ্গে জেলার ছ’টি পরীক্ষাকেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের হুটার বাজিয়ে, সামনে ‘ঐরাবত’ (হাতির আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বনদপ্তরের বিশেষ গাড়ি) রেখে, গাড়িতে (বাস বা ছোট গাড়িতে) করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। (প্রচ্ছদের ছবি- অরূপ নন্দী)