দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ মে: প্রায় প্রতি শুক্রবারই ক্লাস শেষে বিকেল নাগাদ বাড়ি যান স্নেহা। এদিন অবশ্য বাড়ি যাননি। বিষয়টা অবশ্য খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলে মাথা ঘামায়নি তাঁর পরিবার কিংবা মেসের মালিক কর্তৃপক্ষও। কিন্তু, তার পরিণতি যে এতখানি নির্মম হতে পারে; তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউই। শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে কেরানীচটি এলাকায় অবস্থিত ওই মেস থেকেই এম.এ প্রথম বর্ষের ছাত্রী স্নেহা আদকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানার পুলিশ। বছর ২১-র স্নেহা কেরানীচটি সংলগ্ন ভাদুতলাতে অবস্থিত মেদিনীপুর সিটি কলেজের ভূগোল বিষয়ের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী বলে জানা গেছে কলেজ সূত্রে। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর এলাকায়। খবর পাওয়ার পর এদিন রাত্রি ১০টা নাগাদ মেদিনীপুর শহরে পৌঁছন স্নেহার বাবা, দাদা সহ পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।
স্নেহার পরিবার ও মেস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মেদিনীপুর সিটি কলেজের ছাত্রী স্নেহা সহ মোট ১১ জন ছাত্রী কেরানীচটির ওই মেসের দোতলায় থাকতেন। শুক্রবার বিকেলে কলেজ শেষে তাঁদের মধ্যে ৬ জন বাড়ি চলে যান। স্নেহা সহ ৫ জন ছিলেন। তবে, স্নেহার রুমে তিনি একাই ছিলেন। তাঁর অন্য দুই রুমমেট (বা, সহপাঠী) অবশ্য বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মেয়েকে বারবার ফোন করার পরও সুইচড অফ পান তাঁর বাবা। এরপরই তিনি ফোন করেন মেসের মালিককে। তিনি নিচের তলা থেকেই স্নেহাকে ডাক দেন। সাড়া না পেয়ে দোতলায় উঠে অন্য আবাসিকদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, স্নেহা নিজের রুমেই আছে। মেসের মালিক জানান, “ওর রুম ভেতর থেকে লাগানো ছিল। বারবার ডাকার পরও সাড়াশব্দ না পেয়ে আমি আমার ছেলেকে ডাকি। তারপর দু’জনে মিলে দরজাটা জোর করে ঠেলে দেখি, ওর দেহ সিলিং থেকে ঝুলছে! এরপরই কোতোয়ালী থানায় খবর দিই। সেইসঙ্গে ফোন করে ওর বাবাকেও বলি, আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন।” রাত্রি ১০টা নাগাদ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুলিশ দেহ নামিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বাড়ির কাছাকাছি পালপাড়া কলেজে থেকে ভালো নম্বর পেয়ে ভূগোলে স্নাতক (অনার্স) পাস করার পর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত মেদিনীপুর সিটি কলেজে স্নাতকোত্তরে (মাস্টার ডিগ্রিতে) ভর্তি হন স্নেহা। কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গেছে, শুক্রবারও স্নেহা মন দিয়েই ক্লাস করেছেন। ক্যান্টিনে বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডাও মেরেছেন। কোন কিছুই অস্বাভাবিক লাগেনি সহপাঠী কিংবা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এদিন রাত্রি ১১টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে কার্যত বিধ্বস্ত অবস্থায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্নেহার বাবা বলেন, “মেয়ের সবকিছুই ভালো। হাসিখুশি, মিশুকে। প্রতিদিনই সন্ধ্যার সময় আমাদের সঙ্গে কথা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ ফোন করার পর দেখি সুইচড অফ বলছে! তারপরই ওর মেসের মালিককে ফোন করি। বেশ কিছুক্ষণ পর ফোন করে তিনি জানান, বিপদ হয়ে গেছে! শুনেই তড়িঘড়ি গাড়ি ভাড়া করে, ছেলেকে নিয়ে পৌঁছই। ততক্ষণে তো সব শেষ!” তাঁর আক্ষেপ, “এত বুঝত ও, তারপরেও কি করে যে এতটা অবুঝ হয়ে গেল…!” জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। শনিবার ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। যদিও রুম থেকে কোন সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি বলে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই স্নেহার ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৭ জুন: গ্লিসারিন কারখানায় ওয়েল্ডিং- এর কাজ চলাকালীন ভয়াবহ বিস্ফোরণ!…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন: ২০০৮ এর পর ২০২৫। দীর্ঘ প্রায় দুই…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৩ জুন: হাতির পালকে তাক করে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ১২ জুন: গরমে নাজেহাল পড়ুয়ারা আগামী দু’দিন (শুক্রবার ও শনিবার) রাজ্যের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ জুন: শহর মেদিনীপুরের উপকন্ঠে দেলুয়ার জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায়…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুন: চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মেদিনীপুর স্টেশনে একা…