Nature and Environment

গ্রামের নাম বেনেদীঘি! গত কুড়ি বছর ধরে যেন ডেবরা-সবং-পিংলা আর খড়্গপুরের “অক্সিজেন ভাণ্ডার” হয়ে উঠেছে

দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ জুলাই: অরণ্য ধ্বংস করতে করতে সমগ্র মানবসভ্যতাই আজ ধ্বংসের মুখে! মানবজাতি আজ বাধ্য হয়েই গাইতে শুরু করেছে- “দাও ফিরে সে অরণ্য…!” ঘটা করে পালিত হচ্ছে অরণ্য সপ্তাহ। বলা হচ্ছে- প্রাকৃতিক দুর্যোগ রক্ষা করতে পারে প্রকৃতিই। দেরিতে হলেও ঘুম ভাঙতে শুরু করেছে মানুষের।‌ তবে, এর মধ্যেও অবশ্য অর্বাচীনের দল লুকিয়ে লুকিয়ে সবুজ ধ্বংস করে। কেউবা বুক ফুলিয়ে গাছ কাটে, অট্টালিকা বা আবাসন গড়ে তোলার জন্য! সবকিছুর মাঝেই স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়ে যে গ্রামের সকলেই সবুজের চাষ করে, সেই গ্রামের নামখানিও প্রকৃতি-বিজড়িত! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ের ‘বেনেদীঘি’। গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই জীবন ও জীবিকা নির্বাহ হয় এই সবুজ চারা গাছ রোপন করেই। হ্যাঁ, আরও স্পষ্ট করে বললে, আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, লিচু থেকে শুরু করে শাল, সেগুন, মেহগনি আকাশমণি প্রভৃতি চারা গাছ তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে এই গ্রামের বাসিন্দারা জীবিকা নির্বাহ করেন।

গ্রামের নাম বেনেদীঘি! গত কুড়ি বছর ধরে যেন ডেবরা-সবং-পিংলা আর খড়্গপুরের “অক্সিজেন ভাণ্ডার” হয়ে উঠেছে :

বছরের পর বছর ধরে এভাবেই এই গ্রামের বাসিন্দারা এই পেশাকেই লালন‌ পালন করে চলেছেন! শুধু পেশা নয়, সবুজ রোপন এখন তাঁদের নেশাও হয়ে দাঁড়িয়েছে। অরন্য সপ্তাহে এ গ্রাম শুধু জেলা নয়, রাজ্যের মধ্যেও আদর্শ! গ্রামের বাসিন্দা মন্টু বেরা, নেপাল খাঁড়া প্রমুখরা জানান, “আমরা প্রায় কুড়ি বছরের বেশী সময় ধরে এই কাজ করে আসছি। এই কাজের মধ্য দিয়েই আমাদের সংসার চলে৷ এই কাজে হাত লাগায় আমাদের বাড়ির মহিলা থেকে কচিকাঁচারাও। শুধু জীবিকার জন্য নও, ওরাও ভালোবেসে ফেলেছে এই কাজ!” শুধু সবং নয়, পার্শ্ববর্তী পিংলা-ডেবরা-খড়্গপুর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া-পটাশপুর পর্যন্ত চারাগাছ যায় বেনেদীঘি গ্রাম থেকে। অতিমারী আবহে বলা চলে, অক্সিজেনের যোগান দেয় এই গ্রাম! সরকারি সাহায্য ছাড়াই গ্রামের প্রায় অধিকাংশ বাসিন্দা বছরভর এই কাজই করে। ‘অরণ্য সপ্তাহ’ চলাকালীন এই বিষয়ে সবং পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ তপন হাজরা বলেন, “আমরা এই গ্রামের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখবো। সরকারিভাবে যাতে ওই পরিবারগুলির পাশে থাকা যায় সেই উদ্যোগ নেব।”

গ্রামের নাম বেনেদীঘি! গত কুড়ি বছর ধরে যেন ডেবরা-সবং-পিংলা আর খড়্গপুরের “অক্সিজেন ভাণ্ডার” হয়ে উঠেছে :

News Desk

Recent Posts

Vidyasagar University: আবহাওয়ার নিখুঁত খবর জানতে ISRO-র সহযোগিতায় আকাশে যন্ত্র লাগানো বেলুন পাঠাল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জুন: রবিবার (২২ জুন) দুপুর ঠিক ২টো ১…

15 hours ago

Midnapore: “১৯৭৮-এর পর এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি গড়বেতা!” আসরে NDRF-SDRF; প্লাবন পরিস্থিতি চন্দ্রকোনাতেও

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ জুন: ১৯৭৮ সালের পর এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির…

4 days ago

Midnapore: মিয়াজাকি, ব্ল্যাকস্টোন থেকে আম্রপালি, হিমসাগর; মেদিনীপুরে জমজমাট ‘আম উৎসব’

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুন: ৩০ টাকা প্রতি কেজি থেকে ৩ লক্ষ…

6 days ago

Kharagpur: খড়্গপুরের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ! মৃত্যু এক শ্রমিকের

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৭ জুন: গ্লিসারিন কারখানায় ওয়েল্ডিং- এর কাজ চলাকালীন ভয়াবহ বিস্ফোরণ!…

1 week ago

Midnapore: প্রায় দু’দশক পরে পশ্চিম মেদিনীপুরে শুরু হয়েছিল প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া; থমকে গেল আদালতের নির্দেশে

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন: ২০০৮ এর পর ২০২৫। দীর্ঘ প্রায় দুই…

1 week ago

Elephant: হাতির পালকে তাক করে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর এক জ্বলন্ত হুলা; নেটমাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঢল

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৩ জুন: হাতির পালকে তাক করে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর…

2 weeks ago