দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ অক্টোবর: শুধু ‘শব্দবাজি’ই নয়, আদালতের নির্দেশে এবার সব ধরনের বাজিই ‘নিষিদ্ধ’ করে দেওয়া হল! আতসবাজিও পোড়ানো যাবেনা। অবিলম্বে বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের নির্দেশে মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ বাজার থেকে সব ধরনের বাজি বাজেয়াপ্ত করতে এবং বিক্রি বন্ধ করতে অভিযানে নামল। শনিবার দুপুর নাগাদ মেদিনীপুর শহরের আতসবাজির দোকানগুলিতে অভিযান চালিয়ে প্রায় কয়েক কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করলেন কোতোয়ালী থানার পুলিশকর্মীরা। মেদিনীপুর শহরের সাহাভড়ং বাজার, স্কুল বাজার, ভীমচক, নান্নুরচক এলাকার বাজি দোকানগুলিতে হানা দেয় পুলিশ। বিভিন্ন দোকান বিপুল পরিমাণে বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। পাশাপাশি, বাজি বিক্রেতাদের কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাজি বিক্রির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
এদিকে, সব ধরনের বাজি বিক্রি বন্ধ করার কারণ হিসেবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, শুধু শব্দ দূষণ নয়, বায়ু দূষণও রোধ করতেই এই সিদ্ধান্ত। অতিমারী আবহে সাধারণ মানুষ-কে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দিতে তাই ধোঁয়া যুক্ত আলোক-বাজি বা আতসবাজি বিক্রি ও পোড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও, এর ফলে বাজি তৈরি করে জীবনধারণ করা একশ্রেণীর শ্রমজীবী মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হলেন বলে অনেকেই মনে করছেন। বিশেষত, একেবারে শেষ মুহূর্তে এই নির্দেশ আসার ফলে! এ নিয়ে বৃহস্পতিবার মাহামান্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, “বাজি (Crackers) বিক্রি নিষিদ্ধ করার কারণ কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে বিপাকে ফেলা নয়। বরং, এদেশের ১৩০ কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করাই এর উদ্দেশ্য। বিশেষ করে দিল্লির মানুষ জানেন, দূষণ তাঁদের জীবনকে কতটা দুর্বিষহ করে তুলেছে।” সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ, যা গঠিত হয়েছে বিচারক এম আর শাহ এবং বিচারক এ এস বোপান্নার উপস্থিতিতে। সেই বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আনন্দ, উৎসবের কারণে কোটি কোটি নাগরিকের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিপক্ষে নই। কিন্তু, একটা কড়া বার্তা মানুষকে দিতে চাই যে, আমরা এখানে বলব সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের কথাই।” কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেও একই কথা জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার বাজি পোড়ানোর যে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছিল, তা ‘বাতিল’ করে জানানো হয়েছে, ‘সবধরনের বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।’