দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ ফেব্রুয়ারি: একদিকে চলছে স্কুল। অন্যদিকে, চলছে সাধারণ মানুষকে ‘দুয়ারে সরকার’ এর পরিষেবা দেওয়ার কাজ। জেলা শহর মেদিনীপুরের অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয় এবং নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার এমন দৃশ্যই দেখা গেল। মাত্র দু’সপ্তাহ হল (৩ ফেব্রুয়ারি) খুলেছে স্কুল। পড়ুয়াদের উৎসাহ উদ্দীপনা তুঙ্গে। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের কাছে সরাসরি বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য, মেদিনীপুর পৌরসভার উদ্যোগে সেই স্কুলেরই এক পাশে অনুষ্ঠিত হল ‘দুয়ারে সরকার’ এর শিবির। অলিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় এবং নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের তাই উৎসাহ আরো বেড়ে যায়! ক্লাসের ফাঁকেই বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা এগিয়ে এল সাধারণ মানুষের আবেদন পত্র বা ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার জন্য। আর, তাদের সহযোগিতা করলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। স্বভাবতই খুশি ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আসা মেদিনীপুরবাসী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। প্রথম দফায় তা চলবে ২১ ফেব্রুয়ারি অবধি। পরের দফায় ফের শুরু হবে, ১ মার্চ থেকে এবং চলবে ৭ মার্চ অবধি। এবারের বেশিরভাগ শিবিরই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। উদ্দেশ্য একটাই, কন্যাশ্রী তথা ছাত্র-ছাত্রীদের এই কাজে (সরকারি কাজে) উৎসাহিত করা ও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে তাদের ওয়াকিবহাল করা এবং তাদের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের আবেদনপত্র বা ফর্ম গুলিও পূরণ করে নেওয়া। ফলে, উপকৃত হবেন সব পক্ষই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চান, পড়ুয়ারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে সম্যক ধারণা করতে শিখুক। সেজন্যই তিনি প্রতিবছর কলেজ পাস (স্নাতক পাস) পড়ুয়াদের ইন্টার্ন হিসাবে নেওয়ার ঘোষণাও করেছেন। এবার, জেলা শহর মেদিনীপুরে তেমন দৃশ্যই ফুটে উঠলো। পড়াশোনার সাথে সাথে, একদিকে যেমন স্কুলের ছাত্রীরা সাধারণ মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলো; ঠিক তেমনই এর ফলে হাতেকলমে নিজেরাও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করলো।
বৃহস্পতিবার, মেদিনীপুর শহরের নামকরা স্কুল অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্রীরা তথা মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ‘কন্যাশ্রী’রা এগিয়ে এল, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা-র আবেদনপত্র পূরণ করে দেওয়ার জন্য। আর, দশম শ্রেণীর কোয়েল, অনুষ্কা, কৃতিদীপা-দের সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন শিক্ষিকা অর্পিতা কুন্ডু, সোমা মাইতি-রাও। শিবির পরিদর্শনে এসে মেদিনীপুর সদরের মহাকুমাশাসক (SDO) কৌশিক চট্টোপাধ্যায় তাঁদের বাহবা দিলেন। বললেন, “পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের সাধারণ ধারণাও তৈরি হলো, অন্যদিকে, তাদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন প্রকল্পের আবেদনপত্র গুলি সঠিকভাবে পূরণও করতে পারলেন।” এসডিও ছাড়াও দপ্তরের আধিকারিক অরিন্দম সেনগুপ্ত উপস্থিত ছিলেন এই শিবিরে।