তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ এপ্রিল:”বাবুই কোথা বাসা বোনে- চাতক বারি যাচে রে? সে আমাদের বাংলা দেশ, আমাদেরই বাংলা রে!” ‘ছন্দের জাদুকর’ (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত) এর সৃষ্টিতে এই সোনার বাংলায় ‘চাতক’ অপেক্ষা করে থাকে শীতল বারিধারা’র। তবে, এই প্রখর দাবদাহের মধ্যে প্রত্যেক দক্ষিণবঙ্গ বাসীই এখন যেন চাতকের মতোই বৃষ্টির জন্য হাহাকার করে চলছেন। আর, এই ‘সোনার বাংলা’র ই এক বিশেষ ‘লোকবিশ্বাস’ মেনে, বৃষ্টি পেতে কোথাও কোথাও দেওয়া হচ্ছে ‘ব্যাঙের বিয়ে’ও! বুধবার হুগলির আরামবাগের পর বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা। প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে মুক্তি আর একপশলা বৃষ্টির জন্য, চন্দ্রকোনার দরবস্তিবালা গ্রামের বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ব্যাঙের বিয়ে দিলেন। তবে, বিষয়টিকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।

thebengalpost.net
ব্যাঙের বিয়ে :

জানা যায়, এদিন চন্দ্রকোনা থানার দরবস্তিবালা গ্রামের একটি কালি মন্দিরে বৃহদাকার একটি ব্যাঙকে ধরে তার পুজোর আয়োজন করেন বেশকিছু বাসিন্দা।ধূপ, সিঁদুর, ফুল সহ নানান উপকরণ সাজিয়ে গ্রামের কালি মন্দিরে একটি গর্ত খুঁড়ে, তাতে ব্যাঙকে বেঁধে সিঁদুর হলুদ মাখিয়ে জল ঢেলে ফুল বেলপাতা চড়িয়ে শঙ্খ-ঝাজ-ঘন্টা বাজিয়ে পুরোহিত দিয়ে ব্যাঙের পুজোর আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য যে, এই দরবস্তি গ্রাম কৃষি প্রধান এলাকা। কৃষির উপরই নির্ভরশীল সকলে। আর, বৃষ্টির অভাবে এই চাঁদিফাটা গরমে ক্ষতি হচ্ছে সদ্য লাগানো তিল চাষের। জমিতে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছ, জানান কৃষকরা। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষের ক্ষতি তো হচ্ছেই, তার সঙ্গে প্রচন্ড দাবদাহে ঘরে বাইরে টেকা দুর্বিসহ হয়ে উঠছে! এসবের হাত থেকে রেহাই পেতে একমাত্র ভরসা স্বস্তির বৃষ্টি। আর সে জন্যই, বাংলার প্রাচীন ‘লোকবিশ্বাস’ উপর ভরসা করে, এই ব্যাঙ পুজোর আয়োজন বলে দাবি বাসিন্দাদের।