দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ মার্চ:’রেলশহর’ খড়্গপুরের ‘সাট্টা ডন’ তপন দত্ত-কে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার মধ্যরাতে তার ইন্দা’র বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার (২২ মার্চ) তাকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ (শুক্রবার) সকালে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (NRS Medical College and Hospital) মৃত্যু হয় বছর ৪৩ এর যুবক সোনা মল্লিকের। শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের বাঙালিপাড়ার বাসিন্দা সোনা কাজ করত এই তপন দত্ত’র সাট্টা গদিতে বা গোডাউনে। পরিবারের অভিযোগ ছিল, ১৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাতে, তাকে নির্মমভাবে মেরেছিল সাট্টা গদিতে কাজ করা অন্যান্য সহকর্মীরা এবং এতে মদত ছিল খোদ সাট্টা মালিক তপনেরও। আর, তাতেই মাথায় ও কানে গুরুতর চোট পেয়ে মৃত্যু হয় সোনার! খড়্গপুর, মেদিনীপুর থেকে কলকাতা নিয়ে গেলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। এরপরই, ১৮ মার্চ, শুক্রবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর টাউন থানায় সাট্টা মালিক তপন ও তার গোডাউনের কর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেন, সোনার বাবা তথা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী কানাইলাল মল্লিক।
এদিকে, তপন দত্ত এবং তার দোকানের কর্মীরা ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিল। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমবার (২১ মার্চ) রাতেই বাড়ি ফিরেছিল সে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, টাউন থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে! পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে সে। বছর ৫৫’র তপন জানিয়েছে, তার দোকানে অ্যাটম বলে আরেকজন যুবক কাজ করত। তার সঙ্গেই টাকাপয়সার হিসেব নিয়ে সোনার গন্ডগোল হয়েছিল। দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি-মারপিট হয়। তপন গিয়ে দু’জনকে সরিয়ে দেয়। হয়তো তার আগেই মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছিল সোনা। যা সেই সময় বোঝা যায়নি, সোনা বাড়িও চলে যায়! এদিকে, ঘটনার পর থেকে ইন্দার বাসিন্দা অ্যাটম নামে ওই যুবক ফেরার। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাসদুয়েক আগে রেলশহরের ট্রাফিক এলাকার সাট্টা ডন তপন দত্তের সাট্টা গদিতে বা সাট্টা গোডাউনে কাজে ঢুকেছিল সোনা। পরিবার অবশ্য জানত, কোনো ব্যবসায়ীর দোকানে কাজ পেয়েছে সোনা। সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন থাকায় বাধা দেননি পরিবারের সদস্যরা। সোনা সন্ধ্যার সময় কাজে যেত, রাত্রি ১২ টা নাগাদ ফিরতো। বৃহস্পতিবার রাতেও ফেরে সোনা। তবে, সারা শরীরে গুরুতর আঘাত নিয়ে! বাড়িতে সে জানিয়েছিল, দোকানের এক কর্মচারী হিসেবের গরমিল করত, তা মালিককে বলে দেওয়ায় তাকে মেরেছে! এরপরই, মাথার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সোনা। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি! স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা’কে ছেড়ে চলে যায় সোনা। এদিকে, খড়্গপুর শহরে অবৈধ সাট্টা কারবার নিয়ে ফের একবার সরব হয়েছেন আপামর খড়্গপুরবাসী থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। শাসকদলের তরফেও জানানো হয়েছে, পুলিশের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ এই ধরনের অবৈধ কারবারের বিষয়ে।