দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ এপ্রিল:প্রায় দু’মাস আগে খুলে গেছে রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলি। ধীরে ধীরে খুলছে বেসরকারি স্কুলগুলিও। অতিমারীর বন্দী-দশা কাটিয়ে প্রায় দু’বছর পর, সোমবার (১১ এপ্রিল) খুলে গেল মেদিনীপুর শহরের আরও একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে, প্রথম দিনের স্কুল ঘিরে সোমবার সকাল থেকেই বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতন (Vidyasagar Sishu Niketan) নামে ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে ছিল অভিভাবক আর কচিকাঁচাদের ভিড়। সকাল সাড়ে সাতটার পর থেকেই যেন একপ্রকার ঢেউ আছড়ে পড়েছিল শহরের সিপাই বাজার গির্জা সংলগ্ন ওই স্কুলের রাস্তায়। ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়। যদিও, স্কুলের তরফে প্রতিটি ক্লাসের ক্ষেত্রে প্রবেশের ব্যবধান রাখা হয়েছিল ১০ মিনিট করে। ৮ টা থেকে ৮ টা ২০ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল বিভিন্ন ক্লাসের (লোয়ার নার্সারি থেকে ফোর অবধি) কচিকাঁচাদের প্রবেশের জন্য। তবে, উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে সকল অভিভাবকই সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা থেকেই স্কুলের সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ২০২০’র মার্চের পর প্রায় দু’বছর স্কুল ছুটি থাকায়, অন্তত তিনটি ক্লাসের কচিকাঁচারা প্রথমবার স্কুলের মুখ দেখলো। সরকারি মাধ্যম স্কুলের ক্ষেত্রে তা যেমন প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী, বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে তা নার্সারি বা লোয়ার বা কেজি (যে স্কুলে যেমন নাম) প্রভৃতি। স্বভাবতই, এক এক করে বিভিন্ন স্কুলের এই শিশু শিক্ষার্থীদের প্রথমবার স্কুলে পদার্পণ ঘিরে কচিকাঁচা আর অভিভাবক, উভয়ের মধ্যেই দেখা দিয়েছে উৎসাহ ও উদ্দীপনার ছোঁয়া। অন্যদিকে, অন্যান্য শ্রেণীর পড়ুয়ারাও প্রায় দু’বছর পরে তাদের প্রিয় স্কুল প্রাঙ্গণে দাপাদাপি করার সুযোগ পেয়েছে। ফলে, তাদের মধ্যেও উন্মাদনার অভাব নেই। সোমবার, মেদিনীপুর শহরের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম (ICSE) স্কুল বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের লোয়ার নার্সারি’র সাথে সাথে আপার নার্সারি ও কেজি শ্রেণীর পড়ুয়ারাও প্রথমবারের জন্য স্কুলের মুখ দেখলো। কারণ, গত দু’বছর অতিমারীর প্রকোপে এই দু’টি শ্রেণীর পড়ুয়াদের ঘরে বসেই ক্লাস করতে হয়েছে। এদিন তাই কচিকাঁচাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে পেরে খুশিতে ফেট পড়লেন অভিভাবকরা। তাঁরা বললেন, “সমস্ত ভিড়ভাট্টা, গুমোট গরম, যানজটের যন্ত্রণা যেন এই আনন্দের কাছে কিছুই নয়! স্কুল ছাড়া কি শিশুদের সার্বিক বিকাশ সম্ভব!” খুশি পড়ুয়ারাও। যে স্কুল শিশুদের ‘দ্বিতীয় গৃহ’ (Second Home) হিসেবে পরিচিত, সেখানে পৌঁছে তারাও যেন নিজেদের প্রিয় জগত ফিরে পেল!