দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ মে: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটি কিরণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে (Rangamati Kironmoyee High School) মেডিক্যালের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা ‘নিট’ (NEET/ National Eligibility Cum Entrance Test) পরীক্ষার সিট পড়েছিল ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের বছর ১৯-র ছাত্রী লিপ্সা সাউ এর। বাবা-মা’র সঙ্গে গাড়িতে করে নির্ধারিত সময়ে (রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ) পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেও গিয়েছিল সে। এরপর, রোল নম্বর অনুযায়ী নির্ধারিত রুমেও চলে যায় লিপ্সা। যেহেতু বেলা ২টো থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, তাই হাতে বেশ কিছুক্ষণ সময় থাকায় স্কুলের শৌচাগারে গিয়েছিল সে। সেই সময়ই তার পায়ে একটি সাপ ছোবল মারে বলে দাবি লিপ্সার। তার চিৎকারে ছুটে আসেন সকলে। দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বা ইনভিজিলেটরদের তৎপরতায় লিপ্সার অভিভাবকদের দ্রুত জানানো হয় বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা নিজেদের গাড়িতে করে লিপ্সা-কে নিয়ে যান মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনা ঘিরে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে!

thebengalpost.net
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে লিপ্সা সাউ:

এদিকে, বেলা ১টা ১০ নাগাদ লিপ্সাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। একইসঙ্গে তার ব্লাড ও ইউরিন-ও সংগ্রহ করেন চিকিৎসকেরা। অন্যদিকে, নিট পরীক্ষার ক্ষেত্রে ‘নির্দিষ্ট’ পরীক্ষাকেন্দ্র ছাড়া হাসপাতাল বা কোথাও পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম নেই! প্রাথমিক চিকিৎসার পরই তাই লিপ্সা পরীক্ষাকেন্দ্রে (রাঙামাটি স্কুলে) ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। নিজের ‘মূল্যবান’ একটা বছর নষ্ট করতে চায়নি সে! লিপ্সার বাবা পূর্ণ চন্দ্র সাউ এবং মনোরমা সাউ-ও মেয়ের ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত-কে মেনে নিতে বাধ্য হন। কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অমতেই বেলা ১টা ৪৫ নাগাদ তাঁরা হাসপাতাল থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দিকে রওনা দেন। ‘দৃঢ়চেতা’ লিপ্সা পরীক্ষা দেওয়া শুরুও করে। তবে, ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সে অসুস্থতা বোধ করে! একবার বমিও করে। এরপরই, ফের ইনভিজিলেটরদের তরফে লিপ্সার বাবা-মা’কে খবর দেওয়া হলে, তাঁরা প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় মেয়েকে গাড়িতে চাপিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই এই মুহূর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে লিপ্সা। তাঁর বাবা-মা সন্ধ্যা নাগাদ জানিয়েছেন, “খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি আমরা!”

এই ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে এক বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল নিঃসন্দেহে! পরীক্ষা চলার কারণে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের দাবি, গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ার কারণে স্কুল চত্বর বা শৌচাগারে হয়তো সাপ বা বিষাক্ত পোকামাকড়েরা আশ্রয় নিয়েছে! তবে, নিটের ‘পরীক্ষাকেন্দ্র’ হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে আগাম যে সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা উচিৎ ছিল, তাও দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

thebengalpost.net
রাঙামাটি কিরণময়ী হাই স্কুল: