মণিরাজ ঘোষ, মেদিনীপুর, ২১ জুলাই: বছরখানেক আগেই অনুমোদন মিলেছে। এবার জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। হবে কার্ডিওলজি বা হৃদরোগের বিভাগ (Cardiology Department)। এছাড়াও, তৈরি হচ্ছে ‘আই ব্যাঙ্ক’ (Eye Bank)। জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে হৃদরোগের চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হোক। বছরখানেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক সহায়তা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই বিভাগে তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল। বুধবার কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “কার্ডিওলজি বিভাগের কাজ শুরু হয়েছে। ইলেকট্রিক ও সিভিল ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে। অন্যদিকে, চিকিৎসা সংক্রান্ত মেশিনপত্রের টেন্ডার পেয়েছে ফিলিপস (Philips) কোম্পানি। পরিকাঠামোর কাজ সম্পূর্ণ হলেই মেশিনপত্র বসানো হবে।” কিন্তু, আর কতদিন লাগবে? ডাঃ কুন্ডু জানিয়েছেন, “একটু সময় লাগবে। আই সি বিল্ডিংয়ের ৫ তলায় (টপ ফ্লোর) এই বিভাগ তৈরি হচ্ছে। ওই বিল্ডিংয়ে ২ টি লিফট আছে। আরও ২ টি তৈরি হবে জেলা প্রশাসনের সহায়তায়। সবমিলিয়ে ২-৩ মাসের কাজ আছে।” যত দ্রুত সম্ভব এই বিভাগ তৈরির কাজ শেষ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল জানিয়েছেন, “জেলাবাসীর প্রয়োজনে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে এই বিভাগ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” খুশি জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র’ও। তিনি বললেন, “আমাদের সকল জেলাবাসীর বহুদিনের স্বপ্ন হলো জেলায় হৃদরোগের একটি নিজস্ব বিভাগ থাকবে! মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আশা করছি দ্রুত কাজ শেষ হবে।”

thebengalpost.in
চলছে আই ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার কাজ :

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের “অন্ধত্ব এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা নিয়ন্ত্রণমূলক জাতীয় কর্মসূচি” (NPCB)’র অধীনে নেওয়া “ভিশন-২০২০: দৃষ্টির অধিকার” প্রকল্পের আওতায় গত ১৭ ই আগস্ট মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে একটি “আই ব্যাঙ্ক” (Eye Bank) গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগে এই “আই ব্যাঙ্ক” গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে জুলাই মাস থেকে। মাসখানেকের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু। প্রসঙ্গত, অন্ধত্ব দূরীকরণে বা দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিতে “চক্ষু সংরক্ষণ” (কর্নিয়া সংরক্ষণ) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মৃত্যুর ২ ঘন্টার মধ্যে এই কর্নিয়া সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে পারলে, দৃষ্টিহীন মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে। বর্তমানে, অনেক সহৃদয় মানুষ “মরণোত্তর চক্ষুদান” করছেন। কিন্তু, সঠিক সময়ে এই চক্ষু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছেনা, ফলে তা সার্থকতা পাচ্ছেনা! এই সমস্যাটির উপর গুরুত্ব দিয়েই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে, অন্ধত্ব এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা নিয়ন্ত্রণমূলক জাতীয় কর্মসূচি (NPCP &VI) এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (NHM) আই ব্যাঙ্ক বা চক্ষু ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেশন্যাল প্রোগ্রাম কন্ট্রোল অফ ব্লাইন্ডনেশের তরফ থেকে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। চক্ষু বিভাগের প্রধান বা এইচওডি আই ব্যাংকের নোডাল অফিসার হিসেবে কাজ করবেন। এই বিষয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “আই ব্যাঙ্কের কাজ দ্রুততার সঙ্গে চলছে। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের যে ওটি আছে (আইসি ভবনের চার তলায়), তার উল্টো দিকেই এটি গড়ে তোলা হচ্ছে।”