দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১৮ আগস্ট: টেট পাস না করেও চাকরি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল সহ ৬ জন। বুধবার এমনই অভিযোগ করে, ২০১৪ টেট দুর্নীতি মামলার সঙ্গে অতিরিক্ত একটি হলফনামা জুড়ে দিয়েছিলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। সেই হলফনামা গ্রহণ করে বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকন্যা মণ্ডল সহ ৬ জনকে আদালতে হাজিরা দিতে বলেছিলেন বৃহস্পতিবার দুপুর ৩ টা’র মধ্যে। যথা সময়ে তাঁরা হাজিরাও দিয়েছিলেন। সুকন্যা মণ্ডলের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী অরুনাভ ঘোষ। কিন্তু, এই মামলা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, “পুরানো টেট দুর্নীতি মামলায় অতিরিক্ত হলফনামা গ্রহণ করছিনা। তাই, গতকালের নির্দেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তবে, আলাদা করে মামলা করলে, আদালত তা শুনবে।” এরপরই, স্বস্তি ফিরে পান সুকন্যা সহ ৬ জন।
তবে, আদালতের এই নির্দেশে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমালোচনা করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। যদিও, আইনজীবীদের মতে, যেহেতু সুকন্যার নিয়োগ হয়েছিল ২০১২ সালের টেট পরীক্ষায় এবং আদালতে এখন ২০১৪ টেট থেকে ২০১৬ এবং ২০২০ সালের পরীক্ষার্থীদের মামলা চলছে, তাই দু’টি টেট (২০১২ ও ২০১৪) মামলা একসঙ্গে মিশাতে চাইছেন না বিচারপতি। যদিও, গতকালই বিচারপতি এই সিদ্ধান্ত নিলে, ভালো হতো বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। উল্লেখ্য, বুধবারই সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ ছিলো টেট না দিয়েই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন তিনি। সুকন্যার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি নাকি কোনও দিন স্কুলেই যাননি! বাড়িতে বসেই বেতন পেতেন। স্কুলের রেজিস্টার খাতা নিয়ে যাওয়া হতো তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে। আদালতে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে এই অভিযোগ তোলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এর পরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সুকন্যাকে তলব করে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পার্থ বিচারপতির সামনে হাতজোড় করে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার “কেউ ছাড় পাবেন না!” বাইরে বেরিয়েও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “কেউ ছাড় পাবেন না, সময় এলে সব জানতে পারবেন।” উল্লেখ্য যে, পার্থ ও অর্পিতা’র পুনরায় জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। তবে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে দলে যে ‘অস্বস্তি’ বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য! অন্যদিকে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কমান্ড হাসপাতাল থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। আদালতের নির্দেশে, হেফাজতে থাকাকালীন ৪৮ ঘণ্টা অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে তাঁর।