দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ আগস্ট: চার চার বার আক্রমণ করেও তাঁকে থামাতে পারেনি জেলিফিশের দল! সব বাধা ‘জয়’ করে গত ২৯ জুলাই রাত্রি ঠিক ৯টা ৩১ মিনিট নাগাদ সৃষ্টি করেছিলেন ইতিহাস। মাত্র ১৩ ঘন্টা ১৩ মিনিটে ‘ইংলিশ চ্যানেল’ অতিক্রম করেছিলেন ‘মেদিনীকন্যা’ আফরিন জাবি। অবিভক্ত মেদিনীপুরের ইতিহাসে এই প্রথম! স্বাভাবিকভাবেই আজ, বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল নাগাদ মেদিনীপুরের মাটিতে পা রাখা মাত্রই রাজকীয় সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় আফরিনকে। দিনকয়েক আগেই দাদা-বৌদির সাথে লন্ডন থেকে দিল্লি ফিরেছিলেন আফরিন। এই ক’দিন দিল্লিতে দাদার বাসাতেই ছিলেন তিনি। বুধবার দিল্লি থেকে ট্রেনে করে পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌঁছন আফরিন। নামেন খড়্গপুরের হিজলি স্টেশনে। সঙ্গে ছিলেন বাবা সেখ পিয়ার আলি, মা সাবিনা পারভিন, দাদা আদিল মহম্মদ এবং বৌদি রিজওয়ানা ইয়াসমিন। ইতিহাস সৃষ্টিকারী ঘরের মেয়ে-কে স্টেশনেই ফুল-উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবের তরফে। আর তারপর সেখান থেকেই সুসজ্জিত বাইক র্যালি করে আফরিনকে মেদিনীপুর শহরে নিয়ে আসেন ক্লাবের সদস্যরা। আফরিন ছিলেন হুডখোলা জিপে। তাঁকে ঘিরে শহর তথা জেলাবাসীর আবেগ-উদ্দীপনায় আপ্লুত পড়েন আফরিন।
বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবে পৌঁছন আফরিন। এই ক্লাবেই সেই ৬ বছর বয়স থেকে সাঁতার শিখছেন মেদিনীপুর শহরের দেওয়াননগর এলাকার বাসিন্দা আফরিন। সেই ক্লাব তথা শহর ও জেলাকে গর্বিত করেছেন আফরিন। এদিন ক্লাবের তরফে তাই রাজকীয় সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয় তাঁর জন্য। ক্লাবে সংবর্ধনা দেওয়ার পর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে মেদিনীপুর শহর পরিক্রমা করানো হয় আফরিনকে। আবেগে ভেসে যান আফরিন। এই পুরোটা পথ আফরিনের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর বাবা-মা, দাদা-বৌদি। এদিনের সংবর্ধনা সভা ও শহর পরিক্রমাতে ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা, পুরপ্রধান সৌমেন খান, মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবের সম্পাদক পল্লব কিশোর চ্যাটার্জি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু ঘোষ প্রমুখও। আফরিন তাঁর এই জয় নিজের প্রশিক্ষকদের ‘উৎসর্গ’ করে জানিয়েছেন, “আমি ছোট থেকে শান্তনু স্যার (শান্তনু ঘোষ), বাবুন স্যার (বাবুন নাথ)-এর কাছে প্র্যাকটিস করেছি। কিন্তু, ইংলিশ চ্যানেলের জন্য গত দু-এক বছর ধরে আমি কলকাতার বিশ্বজিত স্যার (বিশ্বজিৎ দে চৌধুরী)-এর কাছে, লেক টাউনের লেকে প্র্যাকটিস করেছি।” আফরিন এও বলেন, “বাবা-মা’র অবদান ছাড়া আমি এতটা পথ পাড়ি দিতে পারতাম না!”
মাত্র ১৩ ঘন্টা ১৩ মিনিটে দুর্গম, হিমশীতল ৩৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন আফরিন। সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে আফরিন এদিন বলেন, “অনেকেই ওই আবহাওয়া আর জেলিফিশের জন্য ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করতে পারেনা। তবে, আমার পাইলট ওইদিন (২৯ জুলাই) বলেন, আবহাওয়া খুব ভালো আছে। আমি ভেবেছিলাম ৮ ঘন্টাতেই কমপ্লিট করে দেব। কিন্তু, শেষ এক কিলোমিটার যেতেই আমার চার-পাঁচ ঘন্টা লেগেছে। যেটুকু মনে পড়ছে, আমাকে চারবার জেলিফিশ আক্রমণ করে…!” তবে, তারা অবশ্য মেদিনীপুরের মেয়ে আফরিনকে রুখে দিতে পারেনি। আফরিন জানায়, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য জিব্রাল্টার প্রনালী। আর তারপর সাঁতারের ম্যারথনে অংশ নিতে চান চলতি বছরই মেদিনীপুর কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পূর্ণ করা আফরিন। আফরিন এভাবেই ‘সাঁতরে জয় করুক বিশ্ব’, চাইছেন আপামর মেদিনীপুরবাসী।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ আগস্ট: ভারতের প্রাচীনতম আইআইটি (Indian Institute of Technology)।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ আগস্ট: এর আগে দু'টি মুখ, চারটি চোখ নিয়ে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ আগস্ট: সিলিং ফ্যানের উপর চাপ পড়লেই তা নিচে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ আগস্ট: কেউ ১ লক্ষ খুইয়েছেন তো কেউ ১০…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ১০ আগস্ট: বোমা ছোঁড়ার পর ৪২ কিলোমিটার দৌড়ে ধরা পড়েছিলেন…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ আগস্ট: বানভাসি ঘাটালের দুর্যোগের নানা চিত্র! কোথাও সেতু…