দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ ফেব্রুয়ারি: বুধবারই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার নির্বিঘ্নে মনোনয়ন জমা করলেন সিপিআইএমের চার প্রার্থী। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশ মেনে মেদিনীপুর শহরের পিপিলস কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেন চার সিপিআইএম প্রার্থী, যথাক্রমে- অজয় মিত্র, সুকুমার আচার্য, সোমনাথ দেব এবং উত্তম চক্রবর্তী। এদিন, কার্যত ‘জামাই খাতির’ করে সিপিআইএম প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করার জন্য নিয়ে যান এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অনুপম মন্ডল। এগিয়ে এসে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “চলুন চলুন…আমি আরও (RO)।” পিপিলস ব্যাঙ্কের ঠিক উল্টো দিকের দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কড়া পুলিশি প্রহরায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য প্রবেশ করেন সিপিআইএম প্রার্থীরা। বলাই বাহুল্য, বিচারপতি চন্দ ঠিক এমনটাই নির্দেশ দিয়েছিলেন। সমবায় ব্যাঙ্কে নমিনেশনের জন্য প্রবেশ করার সময় সিপিআইএম প্রার্থীদের কটাক্ষ, “এখনতো জামাই খাতির করবেনই। আদালতের নির্দেশ আছে না!”

প্রসঙ্গত, প্রায় ১১ বছর পর মেদিনীপুর শহরের পিপিলস কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে নির্বাচন হচ্ছে। ৯০-র দশক থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ব্যাংক পরিচালনা করেছে সিপিআইএম তথা বামেরা। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর তৃণমূল ব্যাংকের দখল নেয়। যদিও, ২০১৪-র নির্বাচনও ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা হয়েছিল বিরোধীদের তরফে। এবারও, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ও মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তরফে ব্যাপক সন্ত্রাস করে সিপিআইএম সহ বিরোধীদের মনোনয়নপত্র তুলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ছিল মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ও বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি)। স্বাভাবিকভাবেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে, বুধবার আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন সিপিআইএমের চার জন প্রার্থী। দীর্ঘ শুনানির পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও, বাকি প্রার্থীদের বিষয়ে আদালত কোন মন্তব্য করেনি। উল্লেখ্য যে, পিপিলস কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ৫১টি আসনে আগামী ২৩ মার্চ হবে নির্বাচন। সিপিআইএমের মেদিনীপুর শহর পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক কুন্দন গোপের দাবি, তাঁদের ৫১ জন প্রার্থীই বুধবার মনোনয়ন করতে এসেছিলেন। তৃণমূল আশ্রিত কেশপুরের দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। ছাড় পাননি বয়স্ক এবং মহিলারাও! পুলিশ ছিল নিরব দর্শকের ভূমিকায়। এদিন, মনোনয়ন জমা করতে এসে চার প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম সুকুমার আচার্য বলেন, “আমরা মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা করতে এসেছিলাম। আমাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপরই আমরা আদালতের শরণাপন্ন হই। আদালত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি শোনেন এবং আমাদের মনোনয়ন জমা নেওয়ার নির্দেশ দেন।” তাঁর আশা সিপিআইএমের বাকি প্রার্থীরাও আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মনোনয়নপত্র জমা করবেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “তৃণমূলের তরফে মনোনয়নে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে, আদালতের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।”