দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে রূপায়িত হয়েছে কিনা খোঁজখবর নিতেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে পর্যালোচনা বৈঠক। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ জেলা শহর মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের মন্ত্রী থেকে সচিব সকলেই। ছিলেন জেলার মন্ত্রী, বিধায়ক, আধিকারিকরাও। বৈঠকের শেষ লগ্নে গ্রাম পঞ্চায়েত তরের জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সমস্যার বিষয়গুলি শুনতে চেয়েছিলেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং সচিব পি.উলগানাথন। রাজ্য সরকারের রাস্তাশ্রী-পথশ্রী’র সাফল্য উল্লেখ করেও বর্ষার আগে নিজেদের এলাকার আরও কিছু গ্রামীণ রাস্তা পাকা করার দাবি রাখেন বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা। সেইসময়ই মঞ্চ থেকে মাইক হাতে শালবনীর বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত মন্তব্য করেন, “পথশ্রী প্রকল্পে রাজ্যে ২২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে। আবার এটাও ঠিক বর্ষার আগে গ্রামের অনেক রাস্তার অবস্থাই খারাপ হয়ে যায়। সেইসব রাস্তার জন্য সরকারকে আলাদা করে বরাদ্দ করার প্রয়োজন নেই। আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিগুলি ইচ্ছে করলেই মোরাম ঢেলে আপাতত সংস্কার করতে পারে। তাঁদের সেই ইচ্ছাও আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, এক ট্রলি মোরাম নিয়ে গেলেও পুলিশ ধরছে…!”

thebengalpost.net
পর্যালোচনা বৈঠকের মঞ্চে:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

এরপরই ভরা সভায় কিছুটা হাসির রোল ওঠে। একে অপরের দিকে চোখ চাওয়াচায়িও করেন অনেকেই! কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন মঞ্চে আসীন একঝাঁক মন্ত্রী, সচিব, জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসকরাও। এরপরই অবশ্য বক্তব্য রাখতে উঠে সেই পরিস্থিতি সামাল দেন খোদ রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। অন্যান্য বিষয়গুলি তুলে ধরার সাথে সাথেই তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ২২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করে দেওয়ার পরও মানুষের চাহিদা থাকবে। এনিয়ে আমাদের এক মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত একটা পরামর্শ দিয়েছেন। তবে, মোরাম নিয়েতো প্রশাসনের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে…!” সন্ধ্যা নাগাদ এই বিষয়ে জেলা পুলিশের সাথেও যোগাযোগ করা হয়। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক কিছুটা রসিকতার সুরেই বলেন, “প্রশাসনের পর্যালোচনা বৈঠকে মন্ত্রী তো তাহলে পুলিশের প্রশংসাই করলেন! পুলিশ নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে। যদিও, বালি-মোরাম এগুলো পুলিশের আওতাধীন নয়। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর দেখে। রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের নির্দেশই আছে অবৈধ মোরাম, বালি পাচার রুখতে হবে। বৈধভাবে বা অনুমতি নিয়ে হলে ছাড় পাবেন। নাহলে তো পুলিশ ধরবেই!” এরপরই জেলা পুলিশের ওই আধিকারিকের কটাক্ষ, “আমাদের জেলার যে মন্ত্রীমশাই এনিয়ে অভিযোগ করেছেন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন পুলিশ যে মোরাম আটকেছিল, তা বৈধ ছিল নাকি অবৈধ!” এনিয়ে পুনরায় মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর সাড়া মেলেনি। তবে, জেলার এক অভিজ্ঞ বিধায়ক বলেন, “শ্রীকান্ত তো জঙ্গলমহলের ছেলে। ও মাটির ভাষাতেই কথা বলে। মাঝেমধ্যে তা নিয়ে একটু বিতর্ক হয় ঠিকই, কিন্তু ও নিজের মতো করেই চালিয়ে যায়!”

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):