দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ সেপ্টেম্বর: মঙ্গলবার ভর দুপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল জেলা শহর মেদিনীপুরে! শহরের কলেজ স্কোয়ার এলাকায় (মেদিনীপুর কলেজের সামনের রাস্তায়), ফুটপাতে থাকা একটি ফাস্ট ফুডের (পেটাই পরোটা) দোকানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দোকানের মালিকের। গুরুতর জখম অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ওই দোকানের আরও দুই কর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত দোকান-মালিকের নাম আশিস সাউ। বাড়ি মেদিনীপুর শহরের ২৪নং ওয়ার্ডের রাঙামাটি এলাকায়। আহত দুই যুবক হলেন যথাক্রমে- সমীর মাঝি ও প্রবীর দাস। সকলেরই বয়স ২০-২৫’র মধ্যে বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

thebengalpost.net
এই দোকানেই ঘটে দুর্ঘটনা :

ইতিমধ্যে জানা গেছে, কলেজ স্কোয়ার এলাকার ওই ফুটপাতে থাকা সমস্ত দোকানগুলিই অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিল স্থানীয় একটি ক্লাব থেকে। ঘটনার পরই বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে সমস্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পুলিশ, পৌরসভা ও বিদ্যুৎদপ্তরের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানা যায়। যদিও, শহরের সচেতন নাগরিকবৃন্দ থেকে শুরু করে বিরোধীরা অভিযোগ তুলছেন, পুলিশ, বিদ্যুৎ দপ্তর ও পৌরসভার নাকের ডগায় কিভাবে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলো? জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের অভিযোগ, “পুলিশ ও পৌরসভার নাকের ডগায় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় কি করে? একটা প্রাণ তো অকালে চলে গেল! ওই ক্লাবের সঙ্গে তো শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা সরাসরি যুক্ত। অবৈধ কাজকর্ম করা তৃণমূলের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ-কে বলব যথাযথ ব্যবস্থা নিক।” এদিকে, ঘটনার পরই হাসপাতালে ছুটে যান যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নির্মাল্য চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, “অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। আমরা মর্মাহত! ওই যুবকেরা আমাদের দলের যুব সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। কিভাবে এই ঘটনা ঘটল পুলিশ ও বিদ্যুৎ দপ্তর তদন্ত করে দেখুক। আমরা অসহায় পরিবারগুলির পাশে থাকার জন্য প্রশাসন ও পৌরসভার কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”

জানা যায়, রোজকার মতোই মঙ্গলবার সকাল থেকে দোকান চালিয়ে ছিলেন আশিস ও তাঁর সহকর্মীরা। দোকান বন্ধ করার সময় দুপুর দু’টো নাগাদ যখন তাঁরা সমস্ত কিছু ধোয়াধুয়ি করছিলেন, সেই সময়ই কোন তার ছিঁড়ে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ৩ জনই। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় এলাকার (৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর) বিপ্লব বসু ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মীরা ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এমারজেন্সি বিভাগেই আশিস-কে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে বাকি দু’জনের। বিকেল নাগাদ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে যুব তৃণমূলের রাজ্য নেতা নির্মাল্য জানান, “প্রবীরের অবস্থা বেশ সঙ্কটজনক ছিল। ইসিজি করা হয়েছে। খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। দেখা যাক! চিকিৎসকেরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ওদের সুস্থ করে তোলার।” সমস্ত ধরনের বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান জানিয়েছেন।

thebengalpost.net
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা :