দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জানুয়ারির: ১৯৮৪ সালে কলেজের ৫-টি ছাত্রীকে মাসিক ৫০-টাকা বৃত্তি প্রদানের মধ্য দিয়েই জেলা শহর মেদিনীপুরের ‘সারদা কল্যাণ ভান্ডার’-র বীজ বপন করেছিলেন রাজা নরেন্দ্র লাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের দর্শন (Philosophy) বিভাগের অধ্যাপিকা রেখা সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সদর মেদিনীপুরের শরৎপল্লী এলাকায় ১৯৮৪ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠিত, মা সারদা-র আদর্শে অনুপ্রাণিত সেই ‘সারদা কল্যাণ ভান্ডার’ (Sarada Kalyan Bhandar) পরবর্তী সময়ে হয়ে উঠছিল হাজার হাজার দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের একমাত্র সহায়। গত ৪০ বছর ধরে অসহায় ছাত্রীদের কাছে সারদা কল্যাণ ভান্ডার এবং পরবর্তী সময়ে সারদা কল্যাণ ভান্ডার কল্যাণপীঠ (Sarada Kalyan Bhandar Kalyanpith) এক আলোকবর্তিকা স্বরূপ। আর সেই আলোকবর্তিকা’র ধ্রুবতারা-স্বরূপিনী, সারদা কল্যাণ ভান্ডারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদিকা ও রূপকার রেখা সরকার মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ৬-টা ৫৫ মিনিটে অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন!

thebengalpost.net
সারদা কল্যাণ ভান্ডার কল্যাণপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে (ছবি- সংগৃহীত):

সারদা দেবীর সাক্ষাৎ ভাবশিষ্যা তথা হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ও জীবিকা গড়ে দেওয়ার পথ-প্রদর্শক, সকলের প্রিয় রেখা দি (প্রাক্তন অধ্যাপিকা রেখা সরকার) মঙ্গলবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে (মেডিকা) প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। ‘রেখা দি’ (রেখা সরকার) রেখে গেলেন তাঁর প্রতিষ্ঠিত দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান সারদা কল্যাণ ভান্ডার ও সারদা কল্যাণ ভান্ডার কল্যাণপীঠ সহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে (সারদা কল্যাণ ভান্ডারের বৃত্তির মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে) ‘সুপ্রতিষ্ঠিত’ তাঁর কয়েক হাজার ছেল-মেয়েকেও! তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতে গিয়ে রাজা নরেন্দ্র লাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের কৃতী ‘প্রাক্তনী’ তথা মেদিনীপুর কলেজের ইতিহাস বিভাগের বর্তমান অধ্যাপিকা ড. অপর্নিতা ভট্টাচার্য (Dr. Aparnita Bhattacharjee) লেখেন, “আমার দেখা অনন্য এক কর্মযোগী রেখাদি। এত বড় কর্মকাণ্ড, এত ধীরস্থির ভাবে তিনি পরিচালনা করতেন। ছাত্রজীবন পের করে, কর্মজীবনে প্রবেশ করে ওঁদের কিছু কর্মকাণ্ড সচক্ষে দেখার সুযোগ ঘটেছে। দেখেছি কি সুচারুভাবে কত দায়িত্ব পালন করে চলেছে রেখা দি (রেখা দি, ভারতী দি ও তপতী দি)-দের প্রতিষ্ঠান। পরিচয় পেয়েছি তাঁর রসবোধের। গাম্ভীর্যের আড়ালে এক স্নেহময়ী মাতৃস্বত্তার! উচ্চ মাধ্যমিকের সময় আমার জন্য তাঁর নেওয়া পদক্ষেপ পাল্টে দিয়েছিল আমার জীবনের গতিপথ। আজ আমি যে স্থানে রয়েছি, তার সূত্রপাত সেদিন ঘটেছিল। বেশি কথা বলতে দেখিনি ওঁকে। ওঁর জীবন প্রকৃত অর্থেই ওঁর বাণী হয়ে উঠেছে। অসীম উদ্যোগী রেখা দি’র জন্য আমার আনত প্রণাম ও বিনম্র শ্রদ্ধা!” (সম্পাদনা- মণিরাজ ঘোষ।)

thebengalpost.net
সারদা কল্যাণ ভান্ডার: