মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ ফেব্রুয়ারি:”কন্যাশ্রীর মেয়েরা… কোথায়? এখন আর তোমাদের পিতা-মাতারা বলেনাতো এখনই বিয়ে দেব? তোমরাই তো দাঁড়াবে! এখন স্কুলে পড়ছো। স্কুলে স্কলারশিপ। কলেজে স্কলারশিপ। ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত স্কলারশিপ করে দেওয়া হয়েছে। যখন ইউনিভার্সিটি যাবে দু’হাজার-আড়াই হাজার টাকা করে স্কলারশিপ পাবে…কি খুশি তো কন্যাশ্রীরা?” উল্লাসে ফেটে পড়লো জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে আসা কয়েক হাজার ‘কন্যাশ্রী’। ছুটির দিন না হলেও যারা সবুজ সাথী, কন্যাশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তা হিসেবে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেদিনীপুরের সভায়। মমতা বুঝলেন আর বোঝালেন তাঁর ‘কন্যাশ্রী’ শুধুই ‘বিশ্বশ্রী’ হয়নি, ‘ভবিষ্যৎ’ এর অন্যতম ‘ভরসা’ও হয়েছে! সঙ্গে অবশ্য জুড়লেন ছাত্র-যুবদেরও। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “ছেলেদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ আছে। ঐক্যশ্রী আছে। শিক্ষাশ্রী আছে। বিদেশে পড়তে চাইলে…স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড আছে। আমার সরকারই গ্যারেন্টার!” না, ছাত্র-যুবদের ‘সোল্লাস’ ততখানি শোনা গেলোনা, এবারও গলা ছেড়ে চিৎকার করলেন সেই কন্যাশ্রীরাই!
কন্যাশ্রীর পর? অতীতের (২০২১) মতোই ভবিষ্যতের ভোট-বৈতরণী উতরোতেও মমতার সবথেকে বড় ‘শক্তি’ হতে চলেছে নিঃসন্দেহে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। বৃহস্পতিবারের (১৬ ফেব্রুয়ারি) সভায় কন্যাশ্রীদের ঠিক পেছনেই বসেছিলেন কয়েক হাজার গৃহলক্ষ্মী। মমতা বললেন, “সারা জীবনের জন্য কারুর কাছে ভিক্ষে চাইতে হবে না! ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত পাবেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ৬০ পেরোলেই সরাসরি বার্ধক্য ভাতা। মাসে মাসে ১ হাজার টাকা করে পাবেন। গতকালই বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে।” স্মরণ করিয়ে দিলেন ১ কোটি ৮৮ লক্ষ মহিলা এই মুহূর্তে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছেন। এদিনের, সভাতেও সেই ‘লক্ষ্মী’ দের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো! মেদিনীপুরের রাজপথে লক্ষাধিক ভিড়ের মাঝে চোখে পড়ল বেশি কন্যাশ্রী আর গৃহলক্ষ্মীদেরই। বোঝা গেলো, রাজপথে যতোই চাকরিজীবীদের আন্দোলন হোক, ডি.এ’র দাবিতে অনশন হোক কিংবা আদালতের রায়ে ভুয়োদের চাকরি বাতিল হোক; নারীশক্তির আস্থা সেই মমতাতেই!
উল্লেখ্য যে, বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মেদিনীপুর কলেজ কলেজিয়েট মাঠের সভা (সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান) থেকে মুখ্যমন্ত্রী মোট ৬৯৬ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, নবরূপে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতাল, দাসপুরের গোল্ডেন হাব (সোনার হাব), গনগনি পর্যটনকেন্দ্র, ঘাটালের নার্সিং ছাত্রী নিবাস সহ ৪৫টি প্রকল্প এবং নির্মাণের উদ্বোধন করেন। এজন্য, বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৯০ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। এছাড়াও, ৪০৫ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প ও নির্মাণ কার্যের এদিন শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা আটকে রাখা থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। মমতার অভিযোগ, “আমাদের মন্ত্রীরা দিল্লি গিয়েও কোন লাভ হয়নি। কেন্দ্র বরাদ্দ পাঠাচ্ছেনা। আমরা নিজেরাই ৬৫০ কোটি টাকা খরচ করে কেলেঘাই কপালেশ্বরী থেকে চন্দনেশ্বর, পলাশপাই, দুর্গাচটি প্রভৃতি খাল সারিয়েছি।” ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সম্পূর্ণ হলে দুই মেদিনীপুরের ১৭ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান। এদিনও, মুখ্যমন্ত্রী তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সরকারি সভা থেকেও কেন্দ্র সরকারকে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখান থেকে নেতারা যাচ্ছে, আর বলছে, জলটা দেওয়ার দরকার নেই, রাস্তাটা দেওয়ার দরকার নেই… মানুষ খাবে কি? আবাস যোজনায় ১৭ লক্ষ নাম কেটে দিয়েছে। একশো দিনের টাকা আটকে রেখেছে।” একশো দিনের কাজ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধার সংযোগ নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “জীবনটাই অনলাইন করে দিচ্ছেন তো!… কত গ্রাম আছে, ব্লক আছে ব্যাঙ্ক নেই, পোস্ট অফিস নেই। তো অনলাইন টা করবে কি করে? মাথা দিয়ে না মুণ্ডু দিয়ে?” ফের একবার কন্যাশ্রী আর গৃহলক্ষ্মীদের তুমুল হাততালি শোনা গেল!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: গবাদি পশু (মহিষ) খুঁজতে বেরিয়ে দলছুট দাঁতালের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: ছুটিতেও ছুটি নেই তাঁর। গত কয়েকদিন ধরে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: সরকারিভাবে জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিললো।…