দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ সেপ্টেম্বর: নিম্নচাপের দুর্যোগের মধ্যেই মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ‘মিনি টর্নেডো’ তছনছ করে দিয়ে চলে গেল একটা গোটা গ্রামকে! ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর গ্রামীণের কলাইকুন্ডা ১ নং অঞ্চলের অন্তর্গত অন্তর্গত পূর্ব আম্বা গ্রামে। নিম্নচাপের কারণে, নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। মঙ্গলবার গভীর রাতেও বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত চলছিল। আর, সেই বৃষ্টির মধ্যেই হঠাৎ রাত্রি দু’টো – আড়াইটা নাগাদ পূর্ব আম্বা গ্রামে একটি মিনি টর্নেডো (Mini Tornado) বয়ে যায়! মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই এলাকা তছনছ করে দিয়ে চলে যায় এই মিনি টর্নেডো। প্রায় ৭০-৭৫ টি মাটির বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। রাস্তা ও ঘরবাড়ির উপর বড় বড় গাছ পড়েছে। জলমগ্ন এলাকা আরও বিপর্যস্ত হয়েছে। বুধবার সকালেই বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক দীনেন রায়। তিনি বলেন, “ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। নিম্নচাপের বৃষ্টির মধ্যেই গতকাল রাতে একটি স্বল্প সময়ের ঝড় এই এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যায়। বেশকিছু ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তার উপর গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এলাকাবাসীর পাশে থাকার জন্য আমরা পৌঁছেছি।” অন্যদিকে, শিক্ষক ও পরিবেশবিদ ড. শুভেন্দু ঘোষ জানিয়েছেন, “বায়ুচাপের হঠাৎ করে তারতম্য হলে, মিনি টর্নেডো হতে পারে। ঘূর্ণাবর্ত বা সাইক্লোনের ফলে বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্য হয়। ফলে, খুব স্বল্প সময়ের জন্য মিনি টর্নেডো বা এই ধরনের স্বল্পস্থায়ী অথচ ভয়ঙ্কর ঝড় বয়ে যেতে পারে।” (এ নিয়ে বিস্তারিত পরবর্তী প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব।)
এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, বন্যাকবলিত জেলায় ইতিমধ্যে ৬ লক্ষ ২৮ হাজার ২৩১ জন মানুষ বানভাসি হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৩৬২ টি বাড়ি। জেলায় এই ক’দিনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা বন্যার ফলে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এর মধ্যে, দেওয়াল চাপা পড়ে ৭ জনের এবং জলে তলিয়ে গিয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ হাজারের বেশি ত্রিপল বিলি করা হয়েছে। ৬৯ টি স্পিডবোট ব্যবহৃত হচ্ছে। সবং, পিংলা, নারায়ণগড়, ডেবরা, কেশপুর, খড়্গপুর ১ এবং মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল।