দ্য বেঙ্গল পোস্ট, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ ফেব্রুয়ারি: পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে ঐতিহাসিক মোগলমারি বৌদ্ধবিহার এবং শরশঙ্কা দীঘি। দাঁতন এলাকায় অবস্থিত এই দুই সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে আড়াই কোটি টাকা অনুমোদন করল রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান প্রমুখ। জেলাশাসক জানান, “আমরা ডিপিআর তৈরি করে প্রস্তাব আকারে পাঠিয়েছিলাম। তার উপর ভিত্তি করে আড়াই কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে এবং দ্রুত ফাইনাল ডিপিআর পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা আগামী ১০ দিনের মধ্যেই তা পাঠাব।” পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি, শরশঙ্কা ছাড়াও ডেবরার একটি চিলড্রেন পার্কের জন্যও ডিপিআর পাঠানো হবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, “তৎকালীন জেলাশাসক রশ্মি কমলের সময় (২০১৮-‘১৯) থেকেই আমরা এই প্রস্তাব দিয়ে এসেছি। উনি এবং পরবর্তী সময়ে আয়ষা রানীও এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বর্তমান জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরীও একাধিকবার মোগলমারি ও শরশঙ্কাতে এসেছেন। ডিপিআর পাঠানোর ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম।”
জানা গেছে, মোগলমারি বৌদ্ধবিহারের জন্য দেড় কোটি টাকা এবং শরশঙ্কা দীঘির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে যে ডিপিআর পাঠানো হয়েছে তাতে মোগলমারি বৌদ্ধবিহারে একটি মিউজিয়াম এবং চারটি কটেজ বা গেস্ট হাউস সহ বেশকিছু প্রস্তাব আছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মোগলমারিতে মিউজিয়ামের জায়গা নিয়ে যে সমস্যা ছিল, তা মিটেছে। প্রায় ২০ ডেসিমেল জায়গার ওপর তৈরি হবে এই মিউজিয়াম। বৌদ্ধ প্যাগোডার আদলে মিউজিয়ামটি গড়ে তোলা হবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, শরশঙ্কা দীঘিকে কেন্দ্র করে আরও যে ১০০ একর জায়গা রয়েছে, সেখানে সুসমৃদ্ধ পার্ক এবং বেশ কিছু কটেজ গড়ে উঠবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং তাঁর ‘সি-ইউ-কি’ গ্রন্থে প্রাচীন তাম্রলিপ্ত বন্দরের কাছে বেশ কিছু বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্রের অস্তিত্বের কথা বলেছিলেন। ২০০৩ সালে পুরাতাত্বিক খননের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে মোগলমারি বৌদ্ধবিহার। যা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন-১নং ব্লকের দাঁতন বাজার থেকে উত্তর দিকে ৩ কিমি দূরে অবস্থিত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক দত্তের নেতৃত্বে এই ঐতিহাসিক স্থান পুনরুদ্ধারের কাজ চলে। জানা যায়, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে সক্রিয় ছিল এই বৌদ্ধ বিহারটি। এখনও অবধি ন’টি পর্যায়ে খনন কাজ হয়েছে দাঁতনের মোগলমারি বৌদ্ধ বিহারের। অপরদিকে, রাজা শশাঙ্কের আমলের শরশঙ্কা দীঘির ছত্রে ছত্রেও ইতিহাস জড়িয়ে আছে বলে জানান গবেষক ও লেখক সন্তু জানা। তিনি তাঁর ‘বাংলার বৃহত্তম দিঘি শরশঙ্কা’-তে বিস্তারিত লিপিবদ্ধ করেছেন। বাংলার বৃহত্তম এই দীঘির আয়তন প্রায় ১৫০ একর। দাঁতন বাজার থেকে পূর্বে ৩ কিমি গেলেই এই দীঘির দেখা মিলবে। সন্তু বলেন, “আমরা বিধায়কের মাধ্যমে এই সুখবর পেয়েছি। মোগলমারিতে মিউজিয়াম এবং শরশঙ্কাতে পার্ক গড়ে উঠলে, দেড় হাজার বছরের প্রাচীন এই ঐতিহাসিক পর্যটনস্থল আরও সমৃদ্ধ হবে। আমরা চাই, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য এবং গবেষণা চর্চার জন্য শরশঙ্কা দীঘির পাড়ে, একটি সেমিনার হলও তৈরি করা হোক।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন: বাঙালির ভাষা শিক্ষা আর নীতিশিক্ষার ভিত গড়ে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: গবাদি পশু (মহিষ) খুঁজতে বেরিয়ে দলছুট দাঁতালের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: ছুটিতেও ছুটি নেই তাঁর। গত কয়েকদিন ধরে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত…