বিদ্যাসাগর বালিকা বিদ্যাভবন :
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ সেপ্টেম্বর: একেই কন্যা সন্তান! তার উপর আবার ছিল জন্মগত ত্রুটি অর্থাৎ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মা। তাই, প্রসবের পরই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিলেন গর্ভধারিনী! মেদিনীপুরের হোমে (বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে) আয়াদের কাছেই মানুষ হচ্ছিল শিশুটি। গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) শিশুটিকে দত্তক নিলেন সুদূর আমেরিকা নিবাসী এক দম্পতি। তাঁদের মহানুভাবতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে প্রশাসনের অধিকারিক সহ গোটা মেদিনীপুর। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মেদিনীপুর হোমের শিশু পাড়ি দিল বিদেশে!
ঘটনাক্রমে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৯ মে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন এক প্রসূতি। কিন্তু জন্মের পর দেখা যায়, শিশুটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। তার পায়ের গঠন আর পাঁচটা স্বাভাবিক শিশুর মতো নয়। তাই, প্রসবের কিছুদিনের মধ্যেই শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তার মা। শিশুটির বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করে হাসপাতাল। কিন্তু, তাঁরা শিশুটিকে না নেওয়ায়, হাসপাতালে প্রায় ছ’ মাস থাকার পর, শিশুটির ঠাঁই হয় মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন (Vidyasagar Balika Bhawan) হোমে। হোমের আয়া ও নার্সদের কোলেপিঠেই মানুষ হচ্ছিল শিশুটি। এদিকে আমেরিকার মিসিসিপি রাজ্যের বাসিন্দা এক দম্পতি একটি কন্যা সন্তানের খোঁজ করছিলেন বহুদিন ধরেই। তাঁদের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে চার ও ছয় বছর। ওই দম্পতির একজন আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার, অন্যজন খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত। সংসারে টাকা পয়সার অভাব না থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা একটি কন্যা সন্তানের অভাব বোধ করছিলেন! তাই, তাঁরা ভারতীয় কন্যাসন্তান দত্তকের জন্য মনোস্থির করেন। সেইমতো আফা’র (অথরাইজড ফরেন অ্যাডাপশন অথরিটি) মাধ্যমে তাঁরা ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যাবতীয় কাগজপত্র আপলোড করে রেজিস্ট্রেশন করেন কেন্দ্রের ‘সেন্ট্রাল অ্যাডাপশন রিসোর্স অথরিটি’র পোর্টালে। শিশুকন্যা দত্তক নেওয়ার জন্য তাঁরা ভারতের তিনটি রাজ্য নির্বাচন করেন। তার মধ্যে বাংলাও ছিল। সেই সূত্র ধরেই বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনের এই শিশুটিকে তাঁদেরকে দেখানো হয়। শিশুটিকে দেখেই তাঁদের পছন্দ হয়ে যায়।
যদিও, হোম সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বর্তমান বয়স প্রায় দু’বছর তিন মাস। ওই হোমে আরও প্রায় ন’জন শিশু ছিল। তারাই হয়ে উঠেছিল শিশুটির বন্ধু। তবে সে আর পাঁচটা স্বাভাবিক বাচ্চার মতো ছিল না। বাকিদের মতো সে দৌড়তে পারত না। মাথাও সোজা রাখতে পারত না দীর্ঘক্ষণ। আমেরিকান দম্পতি শিশুটির সমস্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখেও, এরকম এক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকেই দত্তক নেওয়ায়, তাঁদের মহৎ ভাবনা ও উদ্দেশ্যকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন প্রত্যেকেই। জেলা আদালতের বিচারক সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার ছাড়পত্র দেন। অতিরিক্ত জেলা শাসক(সমাজকল্যাণ) কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, শিশুটিকে আজ ওই আমেরিকার দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জেলার শিশুসুরক্ষা দপ্তর সুত্রে খবর, শিশুটিকে দত্তক নেওয়া ওই দম্পতির বাড়ি আমেরিকার মিসিসিপি রাজ্যে। মঙ্গলবার সকালেই মেদিনীপুর শহরে এসে পৌঁছান ওই দম্পতি। তাঁরা দেখা মাত্রই কোলে তুলে নেন শিশুটিকে! শিশুটি যখন হোম ছেড়ে যায় হোমের আয়া, নার্সদের চোখে জল! খেলার সঙ্গীকে হারিয়ে মন খারাপ অন্যান্য শিশুদের-ও!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন: বাঙালির ভাষা শিক্ষা আর নীতিশিক্ষার ভিত গড়ে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: গবাদি পশু (মহিষ) খুঁজতে বেরিয়ে দলছুট দাঁতালের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: ছুটিতেও ছুটি নেই তাঁর। গত কয়েকদিন ধরে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত…