দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ১৭ আগস্ট: যাদবপুরের ঘটনার পরই ‘র‌্যাগিং’ (Ragging) নিয়ে নড়েচড়ে বসছে রাজ্যের প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। এর মধ্যেই, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের সরাসরি NMC (National Medical Commission)-তে অভিযোগ ঘিরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে জেলা শহর মেদনীপুরে। ইতিমধ্যে, ফেসবুক ও টুইটারে ঘটনাটি তুলে ধরে সমালোচনা করেছেন অনেকেই। তবে, অভিযোগকারী ওই ছাত্র প্রকাশ্যে আসেননি। এমনকি, ওই পড়ুয়া দিল্লিতে যে অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছেন, সেখানেও তিনি নিজের নাম উল্লেখ করেননি বলেই বিশ্বস্ত সূত্রের খবর। তাঁর অভিযোগ ছিল, গত সপ্তাহে কলেজ হস্টেলের সিনিয়ররা প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হোস্টেলের ছাদে নিয়ে গিয়ে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেছেন। যদিও, অভিযোগপত্রে ওই পড়ুয়া কোন সিনিয়রেরই (বা, দাদাদের) নামোল্লেখ করেননি। তবে, এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মেদনীপুর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে গত সপ্তাহের শেষের দিকেই নির্দেশ আসে বলে সূত্রের খবর। এরপরই, চলতি সপ্তাহের সোমবার অর্থাৎ ১৪ আগস্ট কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি দফায় দফায় ম্যারাথন বৈঠক করে বলে জানা যায়। তবে, এই পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে গোপন রাখা হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল (ফাইল ছবি) :

মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চিঠির কপি পাওয়ার পরই গত ১৪ আগস্ট দফায়-দফায় ম‌্যারাথন বৈঠক করে কলেজের অ‌্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি। পালা করে ডেকে পাঠানো হয় প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের। সবার কাছেই জানতে চাওয়া হয় এরকম কিছু ঘটেছে কি না। কেউই অবশ‌্য ঘটনার কথা স্বীকার করেননি। এমনকি, কমিটির সামনে আসা প্রথম বর্ষের কোনও ছাত্রও এই ধরনের কোনও দুর্ব‌্যবহার বা নির্যাতনের কথা স্বীকার করেননি। সিনিয়র পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, সামনেই কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস, ফেস্ট ও নবীন বরণ উৎসব আছে। সেসব বিষয় নিয়েই গত সপ্তাহে হস্টেলের ছাদে মিটিং ডাকা হয়েছিল। তাঁরা এও জানান, “প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র তার অভিযোগ পত্রে নিজেই উল্লেখ করেছে, সিনিয়ররা যেদিন ছাদে ডেকেছিল, সেদিন সে নিজে উপস্থিত ছিলো না! তার বন্ধু বা সহপাঠীদের কয়েকজন উপস্থিত ছিল। সে বন্ধুদের মুখেই দুর্ব্যবহারের কথা শুনেছে। তারপরই সে অভিযোগ জানায়। কাজেই পুরোটাই ধোঁয়াশা!” এদিকে, গত ১৪ আগস্ট অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির বৈঠকে সদস‌্যদের উপস্থিতিতে হাজির ছাত্রদের লিখিত বয়ান নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের বক্তব‌্যের ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে দিল্লির সংশ্লিষ্ট বিভাগে। যদিও, ওই দিন (১৪ আগস্ট) প্রথম বর্ষের মাত্র ১৪-১৫ জন পড়ুয়া উপস্থিত ছিল বলে জানা যায়। পরদিন (১৫ আগস্ট) স্বাধীনতা দিবসের ছুটি থাকায়, সকলেই বাড়ি চলে যায়। এ প্রসঙ্গে ওই কমিটির সদস্য এক চিকিৎসক জানান, “এই বিষয়ে প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল ছাড়া আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।” প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষা) ডঃ মৌসুমী নন্দী জানিয়েছেন, “ওই অভিযোগের কোন সারবত্তা পাওয়া যায়নি। তবে, অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে রুটিন কিছু আলোচনা হয়েছে।