দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ জুলাই: মঙ্গলবার দুপুরেই গুলি চলেছে খড়্গপুর শহরে। এটিএম সংস্থা’র গাড়ি থেকে টাকা ছিনতাই করতে এসে গুলি চালিয়েছিল চার দুষ্কৃতী। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন সংস্থা’র এক কর্মী। তিনি এখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এবার খড়্গপুর টাউন থানার এক পুলিশ কর্মী (এ এস আই)’র সঙ্গে সরাসরি বিবাদ ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন খড়্গপুর শহরের এক তৃণমূল নেতা। সুনীল সোনকার নামে ওই তৃণমূল কর্মী আইএনটিটিইউসি’র শহর সংগঠক। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সুনীলের ভাই মঙ্গলবার দুপুরের ওই গুলি-কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে, তার খোঁজে সন্ধ্যা নাগাদ ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতে হাজির হয় টাউন থানার পুলিশ। এরপর, ভাইয়ের খোঁজ করা হয়! কিন্তু, তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছিল না, এই অজুহাতে ওই তৃণমূল নেতা সহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই তৃণমূল নেতার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-কেও মারধর করা হয়েছে বলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ। এরপরই, স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অভিযুক্ত এএসআই (ASI) ‘কে ঘিরে ধরে পাল্টা মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। আহত তৃণমূল নেতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তৃণমূল নেতা কর্মীরা অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুনীল সোনকার নামে ওই তৃণমূল নেতা তথা আইএনটিটিইউসি’র শহর সংগঠকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা দুষ্কর্মের অভিযোগ আছে! সেই সূত্র ধরেই, পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার খোঁজে তার বাড়িতে যায়। কিন্তু, সে বাড়িতে ছিলনা বলে জানা গেছে। তবে, তৃণমূল নেতা সুনীল সোনকার ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অভিযুক্ত এএসআই- এর তুমুল বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। তারপরই, হাতাহাতির জায়গায় পৌঁছে যায় ঘটনা! অভিযোগ, তৃণমূল নেতা সহ তাঁর পরিবারের পাঁচজনকে মারধর করে খড়্গপুর টাউন থানার ওই এএসআই। আহতদের খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, ওই এএসআই-কেও ব্যাপক মারধর করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এই ঘটনায় INTTUC ‘র জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ জানিয়েছেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। এই ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। পুলিশের তরফে আমাদের কর্মী ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। তবে, ওনার ভাইকে যদি সন্দেহ করা হয়, তদন্তে নিশ্চয়ই সহযোগিতা করা হবে। এর সঙ্গে মারধরের কোনো সম্পর্ক নেই! পুরো বিষয়টি আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।” এদিকে, এই ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্ত করতে পুলিশ গিয়েছিল। কোনও অফিসার মদ্যপ ছিলেন না, আমরা খোঁজ নিয়েছি। তদন্তে সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ আছে, তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমি পুরো বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখছি।”