দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ ফেব্রুয়ারি: অচিন্ত্য তখন কলকাতায়। বেসরকারি এক হোটেলের কর্মী। ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ময়না কাজ করতেন পাশাপাশি লোকজনদের বাড়িতে (বা, ওই বাড়িতেও)। শুরু হয় প্রেম। প্রেম না বলে, ‘পরকীয়া’ বলাই ভালো! কারণ, বছর ৩০-এর ময়না’র স্বামী ছাড়াও ছিল ৯-১০ বছরের সন্তান। তবুও, অচিন্ত্য’র সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান ময়না। সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয়। প্রেমের টানে সবকিছু ছেড়ে অচিন্ত্য’র হাত ধরে ময়না। উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ সংলগ্ন উত্তর জিয়ালা থানার বাগদা’র বাসিন্দা ময়না গোস্বামী তাঁর প্রেমিক অচিন্ত্য দাসের সঙ্গে চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার জামগাদি গ্রামে। প্রথম প্রথম সবকিছু নাকি ঠিকঠাকই চলছিল। তারপরই প্রেম পালিয়ে যায় জানালা দিয়ে! এরপরই চরম পরিণতি! বছর দুয়েকের মাথায়, গত শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অচিন্ত্য’র বাড়িতে ময়না’র রহস্য মৃত্যু হয়। ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন অচিন্ত্য’র পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, আত্মহত্যা করেছেন ময়না। যদিও, ময়না’র দিদি সরস্বতী গুপ্তা দাবি করেছেন, তাঁর বোনকে পণের জন্য খুন করা হয়েছে।

thebengalpost.net
রহস্যময় মৃত্যু:

অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার পুলিশ গ্রেফতার করেছেন অচিন্ত্য’র বাবা সত্যরঞ্জন দাস-কে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে ময়না’র দেহেরও। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক অচিন্ত্য। ময়নার দিদি সরস্বতী গুপ্তা দাবি করেছেন, বছর দুয়েক আগে দু’জন বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে মন্দিরে বিয়ে করেছিল। বছর ৩৪-এর ময়না’র ১০ বছরের ছেলে এই মুহূর্তে উত্তর ২৪ পরগণা’র বাগদায় তাঁর বাপের বাড়িতেই থাকে। অচিন্ত্য’র সঙ্গে সম্পর্ক প্রথম প্রথম তাঁরা না মানলেও, পরবর্তী সময়ে মেনে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে, এখানে আসার পর পরই তাঁর উপর পণ বা টাকা পয়সার দাবিতে অত্যাচার করা হতো বলে সরস্বতী দাবি করেছেন। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি)-ই ময়না’র কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল বলেও তিনি জানিয়েছেন। কিন্তু, ওইদিনই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়! তাঁদের অভিযোগ, পুলিশে খবর না দিয়ে, শ্বশুর বাড়ির লোকেরাই দেহ নামিয়ে কেন হাসপাতালে ভর্তি করল? তাই, দাঁতন থানায় তাঁরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আপাতত অচিন্ত্য’র বাবা সত্যরঞ্জন দাস-কে গ্রেফতার করেছে। অচিন্ত্য’র খোঁজে চলছে তল্লাশি।