ঘটনার তদন্তে পুলিশ (সোমবারের ছবি) :
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ ডিসেম্বর:’পরকীয়া’ রূপ বিষবৃক্ষের চাষ যেন বেড়েই চলেছে ঘরে ঘরে। অবশ্য ঠিক বেড়ে চলা নয়, সকল যুগে সকল কালেই তা ছিল। তবে, সংযমের আড়ালে! আর, যখনই তা ‘উলঙ্গ’ রূপে প্রকাশ হয়ে পড়েছে, তখনই এর ফল হয়েছে মারাত্মক। ‘সাহিত্য সম্রাট’ বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষায় ‘বিষময়’! ১৮৭৩ সালেই যিনি লিখে গিয়েছিলেন ‘বিষবৃক্ষ’ এর বিখ্যাত লাইনগুলি- “…তাহা সকলেরই গৃহপ্রাঙ্গণে রোপিত আছে। রিপুর প্রাবল্য ইহার বীজ; ঘটনাধীনে তাহা সকল ক্ষেত্রে উপ্ত হইয়া থাকে।…চিত্ত সংযমের অভাবই ইহার অঙ্কুর, তাহাতেই এ বৃক্ষের বৃদ্ধি। এই বৃক্ষ মহাতেজস্বী; একবার ইহার পুষ্টি হইলে, আর নাশ নাই। এবং ইহার শোভা অতিশয় নয়নপ্রীতিকর; দূর হইতে ইহার বিবিধবর্ণ পল্লব ও সমুৎফুল্ল মুকুলদাম দেখিতে অতি রমণীয়। কিন্তু ইহার ফল বিষময়; যে খায়, সেই মরে”। বস্তুত, ‘নিষিদ্ধ’ জিনিসের প্রতিই মানব হৃদয়ের সর্বাধিক আকর্ষণ। আর, তার আড়ালেই লুকিয়ে থাকে গোপন ‘মৃত্যুফাঁদ’! শুধু ডিসেম্বর মাস জুড়ে, কেবল পশ্চিম মেদিনীপুরবাসীই অন্তত চার-চারটি এমন ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকলো। বউদির প্রেমে পড়ে সবংয়ের জগন্নাথ বর্মণের আত্মহত্যা; মায়ের ‘পরকীয়া’র কারণে পিংলার ২ বছরের শিশুকন্যা দীপ্তি জানা’র মর্মান্তিক মৃত্যু (মা পূজার হাতে, তদন্ত চলছে); ক্ষীরপাইয়ের তপন কুমার ঘোষের রহস্যজনক মৃত্যু (অভিযোগ স্ত্রী এর দিকে, তদন্ত চলছে); আর শালবনীর পিড়াকাটার শিরষি গ্রামে বছর ২৫ এর যুবক সনাতন হেমব্রমের নৃশংস হত্যা! প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘুরেফিরে উঠে এসেছে সেই সমাজ-নিষিদ্ধ অবৈধ প্রেম বা পরকীয়া সম্পর্কের তত্ত্ব। সোমবার বছর ২৫ এর সনাতনের দেহ উদ্ধার করে শালবনী থানার পুলিশ তা ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যে, ২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও চালানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের পিড়াকাটা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দূরে, প্রত্যন্ত শিরষি (শিরষা) গ্রামের শম্ভু হেমব্রমের ছেলে সনাতন হেমব্রম (২৫) শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার। চোখে কম দেখে এবং কানেও কম শোনে। সেই সনাতনের দেহ সোমবার সকালে গ্রামের অদূরেই পারাং নদীর পাড়ে এক ঝোপ থেকে উদ্ধার হয়। যুবকের মাথা থেঁতলে যাওয়া এবং শরীরের নিম্নাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় দেহ পড়ে থাকতে দেখেন চাষের কাজে মাঠের দিকে যাওয়া কয়েকজন গ্রামবাসী। তারপরই খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। জেলা পুলিশ ও শালবনী থানার আধিকারিকরাও এসে পৌঁছন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সন্দেহভাজন দুই যুবককে আটক করা হয়। জানা গেছে, ওই গ্রামেরই এক গৃহবধূর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সনাতনের। সেই সম্পর্কে বাধা হয়নি সনাতনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও। ক্রমেই সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়! মৃত যুবকের কাকা মঙ্গল হেমব্রম জানিয়েছেন, “গত কয়েক মাস আগে, গ্রামেরই এক মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ওকে মারধরও করা হয়েছিল।” সেই পুরানো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানিয়েছেন, সেই সম্পর্ক সনাতনকে মারধরের পরেও শেষ হয়ে যায়নি! গোপনে নাকি চলছিল- প্রেম, প্রণয়। হয়তো সেই কারণেই, খুন হয়ে থাকতে পারে সনাতন। পরিবারের অভিযোগ তেমনই। ইতিমধ্যে, শালবনী থানার পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামী এবং আরেকজন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। যদিও, তদন্তে অন্যান্য দিকও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শান্তশিষ্ট এই জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকায়!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন: বাঙালির ভাষা শিক্ষা আর নীতিশিক্ষার ভিত গড়ে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: গবাদি পশু (মহিষ) খুঁজতে বেরিয়ে দলছুট দাঁতালের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: ছুটিতেও ছুটি নেই তাঁর। গত কয়েকদিন ধরে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত…