দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জুলাই: এবার ডিসপ্লে ফেটে যাওয়া (Cracked Display) মোবাইল জুড়ে যাবে নিমেষে! বিজ্ঞানীদের মতে, মোবাইলের (কেলাস/Crystal) স্ব-মেরামতি (Automatic Healing)। আবিষ্কার করেছেন- আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) এবং আইআইএসইআর (IISER- Indian Institute of Science Education and Research) কোলকাতার একদল বিজ্ঞানী। তিনজন প্রধান বিজ্ঞানী ও তাঁদের ৩ জন গবেষক-বিজ্ঞানী ছাত্র মিলে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। ৬ জন বিজ্ঞানী’র মধ্যে ৪ জনই যথাক্রমে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্র। ৩ জন প্রধান বিজ্ঞানী হলেন, যথাক্রমে- আইআইএসইআর কলকাতার (IISER Kolkata) র বিজ্ঞানী সি. মাল্লা রেড্ডি (তেলেঙ্গানার বাসিন্দা, বর্তমানে কলকাতায় থাকেন) এবং নির্মাল্য ঘোষ (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাইয়ের ভূমিপুত্র, বর্তমানে কল্যানীতে থাকেন) এবং আইআইটি খড়্গপুরের ভানু ভূষণ খাটুয়া (বর্তমান, ঝাড়গ্রাম জেলার ভূমিপুত্র, বর্তমানে থাকেন আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসেই)। অন্যদিকে, এই তিন বিজ্ঞানী’র অধীনে কাজ করা ৩ জন গবেষক বিজ্ঞানী হলেন যথাক্রমে- সুরজিৎ ভুঁইয়া (পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির বাসিন্দা এবং বর্তমানে IISER Kolkata র গবেষক বিজ্ঞানী, ড. রেড্ডির ছাত্র); শুভম চান্দেল (বিহারের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে IISER Kolkata র গবেষক বিজ্ঞানী, ড. নির্মাল্য ঘোষের সুযোগ্য ছাত্র) এবং সুমন্ত কুমার করণ (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আনন্দপুরের বাসিন্দা, বর্তমানে আইআইটি খড়্গপুরের গবেষক বিজ্ঞানী, ড. ভানু ভূষণ খাটুয়া’র ছাত্র)। আইআইএসইআর কলকাতা এবং আইআইটি খড়্গপুরের এই ৬ জন বিজ্ঞানীই “কেলাসের স্ব-মেরামতি” আবিষ্কার করে নজির গড়েছেন। কেলাসকে বলপ্রয়োগ করে ভাঙার সময়ে, সেগুলি মুহূর্তের মধ্যে জুড়ে যাচ্ছে, দেখালেন তাঁরা। সপ্তাহখানেক আগেই তাঁদের আবিষ্কার’কে স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকার বিখ্যাত “সায়েন্স” পত্রিকা বা জার্নাল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আইআইএসইআর কলকাতার (IISER Kolkata) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক সি. মাল্লা রেড্ডি এবং তাঁর ছাত্র সুরজিৎ ভুঁইয়া তাঁদের গবেষণাগারে এই বিষয়টি প্রথম দেখতে পান। এরপর, আইআইএসইআর কলকাতার পদার্থবিদ্যার বিভাগের অধ্যাপক নির্মাল্য ঘোষ এবং তাঁর ছাত্র শুভম চান্দেল কেলাসের স্ব-মেরামতের কার্যকরিতা অনুসন্ধান করেন। অন্যদিকে, আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক ভানু ভূষণ খাটুয়া এবং তাঁর ছাত্র সুমন্ত কুমার করণ পর্যবেক্ষণ করে দেখেন, কেলাস যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয় আমেরিকার “সায়েন্স” জার্নালে। যা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানী মহলে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের দরবারে এ দেশের গবেষকরা যে কোনও অংশে কম যান না, এই নতুন গবেষণা তা ফের প্রমাণ করে দিল! কেলাসের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা অদ্ভূত এবং অভূতপূর্ব।
গবেষণার সূত্রপাত, অধ্যাপক সি. মাল্লা রেড্ডি এবং তাঁর গবেষক-ছাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের সুরজিৎ ভুঁইয়ার হাত ধরে। তাঁরাই প্রথমে কেলাসের এই স্ব-মেরামতি লক্ষ্য করেন। তাঁরা দেখেন, বল প্রয়োগ করে কোনও কেলাসকে ভাঙা বা চিড় ধরানো হলে তা ফের নিজে নিজে জুড়ে যাচ্ছে। অনেকটা মানব শরীর যেমন নিজেই ক্ষত মেরামত করে তেমন ভাবেই নিজেই মেরামত করছে কেলাস। এ ব্যাপারে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যুক্ত হন, অধ্যাপক ড. নির্মাল্য ঘোষ (প্রথম ভারতীয় বিজ্ঞানী হিসেবে “জি সি স্টোকস” পুরস্কার প্রাপ্ত) এবং তাঁর ছাত্র শুভম চান্দেল। অন্যদিকে, খড়্গপুর আইআইটি’তে অধ্যাপক ড. খাটুয়া এবং তাঁর গবেষক-ছাত্র সুমন্ত কুমার করণ লক্ষ্য করেন, এই কেলাসগুলি যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতেও রূপান্তরে সক্ষম। যাকে বলা হয় “পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি” (Piezoelectricity)। আইআইটি খড়্গপুরের বিজ্ঞানী ড. খাটুয়া’র মতে, “বর্তমানে মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করার পদ্ধতি (পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি) ব্যবহার করা হয়। সেখানে পিয়েজো-ইলেকট্রিক ক্রিস্টাল ব্যবহার করলে যন্ত্রটি উন্নত এবং দীর্ঘমেয়াদি হবে। শুধু তাই নয়, রোবট এবং মহাকাশযানের ক্ষেত্রেও কেলাসের এই স্ব-মেরামতি বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ, সেগুলিতে নিত্য রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব নয়। ২০১৯ থেকেই আমরা এই ধরনের একটি অর্গানিক মলিকল তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে গেছি। অবশেষে, তা সফল হয়েছে!” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, নিজে থেকে জুড়ে যাবে, এমন জৈব পদার্থ এর আগেও আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু, সেগুলি সবই থকথকে নরম পদার্থ। এই ৬ জন বিজ্ঞানী যেটি আবিষ্কার করেছেন, তা আগের পদার্থ গুলির থেকে ১০ গুন বেশি কঠিন। মোবাইল ফোন, এল ই ডি স্ক্রিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, এই অতি স্ফটিক কঠিন পদার্থটি ফাটল বা ক্ষত মেরামত করে দেবে বলে প্রমাণিত হয়েছে গবেষণায়। স্বভাবতই, সারা বিশ্বে এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। আর, সেই আবিষ্কারের সঙ্গে জুড়ে গেল অবিভক্ত মেদিনীপুরের নাম’ও! (Edited by Maniraj Ghosh)
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ১৭ অক্টোবর: জেলা শহর মেদিনীপুরের 'সবেধন নীলমণি' সিনেমা হল ছিল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ অক্টোবর: দলীয় রাজনীতিতে দীপক সরকারের অনুগামী হিসেবেই পরিচিত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ অক্টোবর: প্রয়াত হলেন সিপিআই(এম)-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ অক্টোবর: সোমবার ভোরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ অক্টোবর: খড়্গপুর গ্রামীণের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক সংলগ্ন এলাকায় (জাতীয়…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, নাগরাকাটা, ৬ অক্টোবর: বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন…