Science and Technology

Midnapore: জীবনদায়ী ওষুধ তৈরিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন! ‘মেদিনীপুরের গর্ব’ মিলনকে সম্মানিত করল ভাবা ইনস্টিটিউট, ডাক পেলেন বিদেশে

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন:জীবনদায়ী ওষুধ তৈরিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেন ‘মেদিনীপুরের গর্ব’ তথা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী মিলন প্রামাণিক। আলোক শক্তি এবং অনুঘটক বিক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে জৈব যৌগ বিষয়ে গবেষণা করে, জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির পথ দেখালেন বছর তিরিশের এই রসায়ন বিজ্ঞানী। ভুবনেশ্বরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট সায়েন্স এডুকেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার’ এ গবেষণা চালানো কালীন এই বিষয়ে সাফল্য অর্জন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঐতিহাসিক দাঁতন এলাকার প্রত্যন্ত পুন্দড়া’র এই মেধাবী সন্তান। তাঁর সাফল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে গত ৩ জুন মুম্বাইয়ের ‘হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট’ (Homi Bhabha National Institute) এর পক্ষ থেকে মিলন-কে “আউটস্ট্যান্ডিং ডক্টরাল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২২” সম্মানে ভূষিত করা হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বয়ং ইসরোর (ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা/ Indian Space Research Organization) চেয়ারম্যান এস. সোমনাথ-ও। তবে, ৬ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার বিষয়ে ব্যস্ত থাকায়, ওই দিন (৩ জুন) মুম্বাইয়ে সশরীরে উপস্থিত থেকে সম্মান গ্রহণ করতে পারেননি মিলন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সম্মান গ্রহণ করেছেন তরুণ এই রসায়ন বিজ্ঞানী। এই মুহূর্তে, দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-তে ‘রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট’ হিসেবে যোগ দিয়েছেন মিলন।

মিলন প্রামাণিক :

জানা যায়, পুন্দড়া’র এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম মিলনের। ‌বাবা মন্টু প্রামানিক একজন গৃহশিক্ষক মিলনের দাদা অমিয় প্রামাণিক-ও গৃহশিক্ষকতা করেন। পরিবারে মেধার অভাব ছিল না, তবে দারিদ্র্য নিত্যসঙ্গী। সেই দারিদ্র্য-কে জয় করেই এগিয়েছেন মেধাবী মিলন। দাঁতনের কোটপাদা উচ্চবিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর, মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে, আইআইটি মাদ্রাজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করার সুযোগ পেয়ে যান। স্নাতকোত্তরের পর, জৈব রসায়ন নিয়ে গবেষণা করেছেন ‘হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট’ এর অন্তর্গত ভুবনেশ্বরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার’ থেকে। ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ড. প্রসেনজিৎ মালের অধীনে গবেষণায় নিমগ্ন ছিলেন মিলন। ২০২২- এর জানুয়ারি মাসেই ডিগ্রি অর্জন করেন মিলন। একজন, ‘সিন্থেটিক কেমিস্ট’ হিসেবে মাল্টি-স্টেপ (multi-step) জৈব সংশ্লেষের মাধ্যমে, ম্যাক্রো ও মাইক্রো অনু তৈরি করাই কাজ মিলনের। আর, তা করতে গিয়েই আলোক শক্তি ও অনুঘটকের বিক্রিয়ায় বিশেষ জৈব যৌগ তথা জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির ফর্মুলা আবিষ্কার করেছেন। মিলন-কে দাঁতন তথা ‘মেদিনীপুরের গর্ব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান। আর, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফোনে মিলন জানিয়েছেন, “আলোক শক্তি ও অনুঘটকের বিক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে জীবনদায়ী অনেক ওষুধ তৈরি করা যাবে। মানুষের জন্য এই গবেষণা চালিয়ে যেতে চাই।”

বাড়িতে যখন নিমগ্ন নিজের কাজে (ফাইল ফটো, সংগৃহীত) :

‘হোমি ভাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট’ এর মঞ্চ (৩ জুন):

News Desk

Recent Posts

Midnapore: সততার পরিচয় দিয়ে শিক্ষকদের মন জিতলো ভাদুতলা স্কুলের সাত্যকি, মনে করালো বর্ণপরিচয়ের নীতিশিক্ষার কথা

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুন: বাঙালির ভাষা শিক্ষা আর নীতিশিক্ষার ভিত গড়ে…

13 hours ago

Midnapore: জঙ্গলে মহিষ খুঁজতে গিয়ে দলছুট হাতির হামলায় মৃত্যু দাদার, আশঙ্কাজনক ভাই! শোকের ছায়া শালবনীতে

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: গবাদি পশু (মহিষ) খুঁজতে বেরিয়ে দলছুট দাঁতালের…

4 days ago

Midnapore: “এক ট্রলি মোরাম নিয়ে গেলেও পুলিশ ধরছে!” পর্যালোচনা বৈঠকে অনুযোগ খোদ মন্ত্রীর; ‘জবাব’ দিল জেলা পুলিশও

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত…

4 days ago

JEE Advance: JEE মেইনসে টপার, অ্যাডভান্সে কেমন ফল করল খড়্গপুরের অর্চিষ্মান? জেনে নিন

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: গত ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স…

5 days ago

Midnapore: ছুটিতেও ছুটি নেই মেদিনীপুরের বিপ্লব স্যারের! জামাইষষ্ঠীর দিনই স্কুলে রক্তদান উৎসব, রক্ত দিলেন ১৬৫ জন

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: ছুটিতেও ছুটি নেই তাঁর। গত কয়েকদিন ধরে…

6 days ago

Midnapore: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে মেদিনীপুর শহরে আক্রান্ত পুলিশ ও পুরকর্মীরা, গ্রেফতার ৪

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মে: আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত…

1 week ago