দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ এপ্রিল:ফের মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা! মৃত্যু হল যুবকের। শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের শালবনী ও সিজুয়া’র মাঝামাঝি ঝাঁ চকচকে গ্রামীণ সড়কে এই রহস্যজনক দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাইকে করে শালবনী থেকে নিজের বাড়ি তিলাবনি গ্রামে যাওয়ার পথে, সন্ধ্যা ৭-৭.৩০ টা নাগাদ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম চিত্ত মাহাত। বয়স আনুমানিক ৩৮-৪০। পুরানো গাড়ি বেচাকেনার ব্যবসা ছিল তাঁর। তরুণ এই ব্যবসায়ীর মৃত্যু-তে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। সকলেই বলছেন, অত্যন্ত সৎ ও পরোপকারী মানুষ ছিলেন চিত্ত। তবে, কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার কারণ নিয়ে ধন্ধে সকলেই! পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শালবনী বাজারের দিক থেকে তিলাবনি-তে বাড়ি ফেরার পথে, বাড়ির অদূরে লালুয়া এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে, দুর্ঘটনাটি ঘটতে কেউ দেখেননি! রাত্রি ৮- টা নাগাদ, রক্তাক্ত ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঝাঁ চকচকে ওই পিচের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার কিছু মানুষ। সেই সময়ই গাড়িতে করে ফিরছিলেন শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ। তিনিই নিজের গাড়িতে করে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পৌঁছে দেন। খবর দেওয়া হয় শালবনী থানাতেও। এদিকে, মাথায় গুরুতর চোট পাওয়া ওই ব্যবসায়ীর অবস্থার অবনতি হলে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রেফার করে। পুলিশের উদ্যোগে দ্রুত তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে, শেষরক্ষা হয়নি! মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। আজ, শনিবার, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেই তাঁর ময়নাতদন্ত হবে বলে পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
তাঁর মৃত্যুর খবর আসার পরই, শোকে ভেঙে পড়ে গ্রাম। বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে ছাড়াও দাদা-ভাইয়েরা আছেন। আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় শোকে মুহ্যমান সকলেই। এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা ছিল তরুণ এই ব্যবসায়ীর। তাঁরাই বলছেন, গাড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তাঁর পকেটে সব সময় বেশ ভালো পরিমাণে টাকা পয়সা থাকত। তাই, ইচ্ছাকৃতভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটানো হতে পারে! পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে শালবনী থানায় তাঁরা লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বাইকের একটা দিক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত গতির কারণে ঝাঁ চকচকে রাস্তায় বাইকের চাকা পিছলে গিয়ে বা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবার, পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে কিনা, তাও তদন্ত করে দেখা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।