দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ আগস্ট:”এইখানে যদি জুন মালিয়া সায়নী সায়ন্তিকা মিমি ঝিমি নুসরাত মুসরাত…নেপাল সিংহ সন্দীপ সিংহ উত্তরা সিংহ যারা লুটেপুটে খায়, তারা দলের সম্পদ হয়, তাহলে তো পার্টি করা যাবেনা!” সম্প্রতি দলীয় কিছু অনুগামীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন শালবনীর বিধায়ক তথা ক্রেতা, সুরক্ষা ও উপভোক্তা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত। সঙ্গে তিনি এও জুড়েছেন, “মমতা, অভিষেক, সুব্রত বক্সীকেও জানিয়ে লাভ হয়নি। দল খারাপ লোককেই ভালো বলছে, আর ভালোকে খারাপ। এটা তো ঠিক নয়। ভালোকে ভালো বলতে হবে, আর খারাপকে খারাপ!” আর, বিস্ফোরক এইসব মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পৌঁছে যায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তারপরই স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে শনিবার বিকেলে শোকজ নোটিশ ধরিয়েছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। এই মুহূর্তে শ্রীকান্ত মাহাত’র ওই ভাইরাল ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর তথা সারা রাজ্য জুড়েই।

thebengalpost.net
গাছতলায় বসে বিস্ফোরণ শ্রীকান্ত মাহাত’র:

সূত্রের খবর অনুযায়ী, নিজের শালবনীর (চকতারিনী’তে) বাড়ির সামনে বসে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) তিনি এইসব মন্তব্য করেছেন। ওইদিন-ই নাকি তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শালবনীর দক্ষিণশোল মৌজায় জমি দখল করার অভিযোগে বিক্ষোভ-পথ অবরোধ হয়েছিল ওই এলাকায়। পরে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপরই, নিজের বাড়ির সামনে একটি গাছতলায় বসে দলীয় কয়েকজন অনুগামীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকে তিনি দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন! সেই তালিকায় একদিকে যেমন আছেন, মেদিনীপুরের বিধায়ক ও রাজ্য সম্পাদক জুন মালিয়া তেমনই আছেন দলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তিকা চট্টোপাধ্যায়, দুই সাংসদ মিমি-নুসরত থেকে গড়বেতার বিধায়ক ও জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা; ঠিক তেমনই আছেন শালবনী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ ও দলের জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ-ও। এরপরই এই ভিডিও ভাইরাল হতে হতে পৌঁছে যায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে! তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শোকজ করার কথা স্বীকার করেছেন দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর ও বিধায়ক অজিত মাইতি। তাঁর মতে, “তৃণমূল শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। এখানে মন্ত্রী থেকে কর্মী সবার গুরুত্ব সমান। তাই দলের অনেক পুরানো কর্মী হলেও, শ্রীকান্ত মাহাত’কে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে।” তবে, ফোন ধরেননি শ্রীকান্ত মাহাত। মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁর অনুগামীরাও। তবে, ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা নাকি বলছেন, “দাদা তো ভুল কিছু বলেননি! শুধু ভিডিও-টা ভাইরাল হয়েই সমস্যা হল!” দলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “কথাবার্তা বলার সময় ভেবেচিন্তে বলা উচিত। দলকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো কাজকর্ম করলে, দল তো ব্যবস্থা নেবেই!” সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দলীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত।(দেখুন সেই ভাইরাল ভিডিও, যার সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি বেঙ্গল পোস্ট:)