দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২২ ডিসেম্বর: পৃথিবীতে প্রথম ‘প্রাণ’ কোথা থেকে এল? বিবর্তনের হাত ধরে কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে জীবজগৎ? পৃথিবীর মধ্যেই, নাকি পৃথিবীর বাইরে থেকে কখনও এসেছিল প্রাণ? এই জিজ্ঞাসা যুগ যুগ ধরে পৃথিবীতে বহমান। পণ্ডিত এবং বিজ্ঞানীরা অবশ্য বিভিন্ন যুগে এর বিভিন্ন উত্তর দিয়েছেন। তবে, তারপরেও স্পষ্ট হয়নি সবকিছু। বিভিন্ন জায়গাতেই থেকে গেছে ধোঁয়াশা! রহস্য। তবে, আধুনিক যুগের বিজ্ঞানীরা মোটামুটি ভাবে একমত যে, পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের সঙ্গে বাইরের কোনও সম্পর্ক নেই। যা হয়েছে, এখানেই হয়েছে। তবে কি এবার সেই ধারণা-ও বদলে যেতে পারে! কারণ, সম্প্রতি জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয় (Hiroshima University) এবং খড়্গপুর আইআইটি (IIT Kharagpur)-এর গবেষকরা একটি ‘উল্কাপিন্ড’ নিয়ে যৌথ গবেষণা চালাচ্ছেন। উল্কাপিন্ডের ইতিহাস ধরেই পৃথিবীতে প্রথম প্রাণের ‘অস্তিত্ব’ খুঁজছেন গবেষকরা!

thebengalpost.net
উল্কাপিন্ড (প্রতীকী ছবি):

জানা যায়, বছর সাতেক আগে অসমের গোলাঘাট জেলার কামারগাঁও গ্রামে একটি উল্কা (Assam Meteorite) এসে পড়ে। এটি নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছিলেন খড়্গপুর আইআইটি’র গবেষকরা। তাঁরা দেখেছেন, এই উল্কায় এমন কিছু উপাদান আছে, যা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া সম্ভব পৃথিবীর বাইরেও প্রাণ আছে, বা বলা ভালো প্রাণ তৈরির মতো উপাদান আছে! তবে, কি সেখান থেকেই পৃথিবীতে প্রাণের আগমণ? সম্প্রতি, খড়্গপুর আইআইটি’র সঙ্গে গবেষণায় যোগ দিয়েছেন জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে উল্কাটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)- এর গবেষণাকারীদের একটি সূত্রে জানা যায়, এই উল্কায় রয়েছে Vesicular Olivine এবং Pyroxene নামের উপাদান। যার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক আছে প্রাণের বিকাশের! কিন্তু, কোথা থেকে এল এই উল্কা? বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মাঝে পাক খাচ্ছিল একটি গ্রহাণু। সেই সময়ে দূর থেকে ছুটে আসে কোনও গ্রহাণু। আর সেটি ধাক্কা মারে এই গ্রহাণু্কে। ফলে গ্রহাণুটি বেশ কয়েক টুকরো হয়ে যায়। তার মধ্যে থেকেই একদম ছোট একটি টুকরো পৃথিবীতে এসে পড়ে। সেটিই পড়েছে অসমের ওই এলাকায়।

এই উল্কাপিণ্ডের মধ্যে অক্সিজেন, কার্বন, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং সালফারের মতো উপাদান রয়েছে বলে জানা যায়। যেগুলি ‘প্রাণ সৃষ্টি’র একেবারে প্রাথমিক উপাদান। আর, সেই কারণেই বিজ্ঞানীদের ধারণা, এমনই কোনও উল্কাপিন্ড থেকেই এক সময়ে প্রাণের শুরুটা হয়েছিল এই গ্রহে। তবে, এই বিষয় নিয়ে এখনও অবধি স্পষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি গবেষকরা। তাঁদের মতে, আগামী দিনে আরও গবেষণার পরে বোঝা যাবে, সত্যি সত্যিই পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের সঙ্গে এই ধরের গ্রহাণুর কোনও সম্পর্ক আছে কি না! তবে একথা সত্যি, এই ধরনের কোনও উল্কা থেকে পৃথিবীর মতো গ্রহে প্রাণের সঞ্চার হতে পারে। এই বিষয়ে তত্ত্বগত কোনও ভুল নেই। এমনই মত গবেষণাকারীদের।

thebengalpost.net
আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur):