দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুলাই: গত ৪ মে-র পর ১৮ জুলাই। মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে ফের আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) ক্যাম্পাসে মেধাবী পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য! শুক্রবার সকালে (১১টা ২০ নাগাদ) আইআইটি খড়্গপুরের রাজেন্দ্র প্রসাদ হলের ডি-২০১ (D-201) রুম থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং- বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আইআইটি খড়্গপুর সূত্রে জানা গেছে মৃত পড়ুয়ার নাম ঋতম মন্ডল (২১)। মেধাবী এই পড়ুয়া কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বাবার নাম উত্তমকুমার মন্ডল। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসে। এই নিয়ে চলতি বছরেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হল চার মেধাবী পড়ুয়ার!

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে নিজের রুমের গেট না খোলায় ওই হলের অন্যান্য আবাসিকরা কর্তৃপক্ষকে (ম্যানেজমেন্টকে) খবর দেয়। হল ম্যানেজার পুলিশকে জানালে, খড়্গপুর টাউন থানার অধীন হিজলি ফাঁড়ির পুলিশ এসে দরজা খুলে দেখে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন পড়ুয়া। গলায় গামছার ফাঁস! এরপরই দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে এই মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আইআইটি খড়্গপুরের এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে।” এদিকে, ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসে মোট ৭ জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো। এর মধ্যে চলতি বছরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো চার জনের! মৃত পড়ুয়ারা হলেন যথাক্রমে- ফাইজান আহমেদ (২০২২), কে.কিরণ চন্দ্রা (২০২৩), দেবীকা পিল্লাই (২০২৪), সাওন মালিক (২০২৫-এর ১২ জানুয়ারি), অনিকেত ওয়ালকার (২০২৫-র ২০ এপ্রিল), মহম্মদ আসিফ কামার (২০২৫-র ৪ মে) এবং সর্বশেষ ঋতম মন্ডল।
গত ২৩ জুন দায়িত্ব নেওয়ার পরই তাই নবনিযুক্ত ডিরেক্টর অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, “সবথেকে মূল্যবান পড়ুয়াদের প্রাণ!” তিনি ‘মাদার’ ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে সেতু অ্যাপ তৈরি করে পড়ুয়া-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টাও করছিলেন। এমনকি, পড়ুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দিতে গত শুক্রবার থেকে হোস্টেল পরিদর্শনও শুরু করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল একটাই ছাত্রছাত্রীদের অস্বাভাবিক মৃত্যু রুখে দেওয়া। তবে, শেষপর্যন্ত তাঁর সমস্ত চেষ্টাই যে বৃথা গেল, তা বলাই বাহুল্য!