দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ নভেম্বর: শোকসংবাদটা পৌঁছেছিল শুক্রবারই। বুকে পাথর চেপে অপেক্ষা শুরু তখন থেকেই। শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই সিআরপিএফ জওয়ান দেবাশিস সিংহের ‘কফিনবন্দী’ দেহ পৌঁছয় গ্রামে। শোকে ভেঙে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ডিঙ্গল গ্রাম! চারদিকে শুধুই কান্নার শব্দ, হাহাকারের ঢেউ।

thebengalpost.net
সিআরপিএফ জওয়ান দেবাশিস সিংহ:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

ছোট মেয়ের অন্নপ্রাশন উপলক্ষে বাড়ি এসেছিলেন। মাত্র ১০ দিন আগেই ছুটি কাটিয়ে ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন দেবাশিস। ডিসেম্বরে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে আবারও বাড়িতে আসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, নিয়তি যে অন্য গল্প লিখে রেখেছিল! ফিরল দেবাশিসের ‘কফিনবন্দী’ দেহ। সিআরপিএফ জওয়ান ও আধিকারিকদের জয়ধ্বনি ভেদ করে শুধুই দেবাশিসের স্ত্রী ও বড় মেয়ের কান্না আর আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল! আর ছোট মেয়ে, ভালোভাবে জ্ঞান হওয়ার আগেই বাবাকে হারালো।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, দেবাশিস ২০১৯ সালে CRPF-এ যোগ দেন। বর্তমানে কর্মরত ছিলেন ছত্তিশগড়ে। জানা গিয়েছে, দিনদশেক আগে হালকা জ্বর নিয়েই ডিউটিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই অসুস্থতা বাড়তে থাকে। ক্যাম্প থেকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি! শুক্রবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বছর ৩০-এর দেবাশিস। ডেঙ্গু বলে প্রাথমিক অনুমান চিকিৎসকদের। শনিবার দেবাশিসের দেহ নিয়ে গ্রামে পৌঁছন সিআরপিএফ জওয়ান ও আধিকারিকরা। গান স্যালুটে, পুষ্প বৃষ্টিতে আর ভারতমাতার জয়ধ্বনিতে শেষ বিদায় জানানো হয় বীর জওয়ানকে। পূর্ণ রাস্ট্রীয় মর্যাদায় তার সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য। সিআরপিএফ আধিকারিকদের তরফে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিজেপি-র জেলা সভাপতি তন্ময় দাস সহ অনেকেই গিয়েছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। তন্ময় বলেন, ‘শুধু আমাদের ডেবরার গ্রাম নয়, দেশমাতা একজন বীর সন্তানকে অকালে হারালেন। সিআরপিএফ-এর তরফে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরাও চাই, ওঁর স্ত্রী, পরিবার সহ ফুটফুটে দু’টি মেয়ের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আর্থিক সহায়তার সাথেই পরিবারের কারুর চাকরির ব্যবস্থা করা হোক।’

thebengalpost.net
শেষ শ্রদ্ধা: