দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুলাই: আই সি ইউ (ICCU)’ তে চিকিৎসক নেই, সম্পূর্ণ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হলো রোগীর! তা সত্ত্বেও মাত্র কয়েক ঘন্টায় বিল হলো ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। মৃত্যু’র পরও ফের ভেন্টিলেশনে দেওয়ার চেষ্টা করা হলো! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ মেদিনীপুর শহরের নামকরা এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, মেদিনীপুর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রথীন চক্রবর্তী’ (বয়স আনুমানিক ৫০)কে শনিবার রাতে সঙ্কটজনক অবস্থায় শহরের নামকরা এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ICU তে। কিন্তু, সারারাত ICU তে কোনো ডাক্তার ছিলেন না! হৃদরোগী রথীন বাবুর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। বারবার রোগীর পরিজনদের তরফে বলা হলেও, কোনো ভ্রুক্ষেপ করেননি কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত রবিবার ভোর ৫ টায় মৃত্যু হয় ওই রোগীর!
মৃতের শ্যালক অরিজিৎ সেন ও স্ত্রী অলিভিয়া চক্রবর্তী রবিবার সকালে অভিযোগ জানালেন, সারারাতের মধ্যে বহুবার ডাক্তারকে এমার্জেন্সি কল করতে বলা হলেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তা করেননি। এমনকি রোগী কখন মারা গেছে সেটা পর্যন্ত বাড়ির লোকেদের জানানো হয়নি! ভোরবেলা তাঁরা যখন দেখতে যান, তখন বলা হয়, “একটা অ্যাপ্লিকেশনে সই করতে হবে। রোগীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হবে।” রাহুল অভিযোগ করলেন, “এরপর আমার দিদি যখন জোর করে আইসিইউ তে ঢুকে জামাইবাবুকে দেখেন, তখন মনিটরে দেখা যায় সব লাইন সমান হয়ে গেছে অর্থাৎ শূন্য। আমরা অভিযোগ করি, উনি তো মারা গেছেন এখন আর ভেন্টিলেশনে দিয়ে কি হবে! সিস্টাররা বলেন মনিটর খারাপ আছে!” শেষ পর্যন্ত, শুধুমাত্র রাতটুকুর জন্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বিল করে তা ধরিয়ে দেওয়া হয় রোগীর পরিবার পরিজনদের হাতে! ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবার পরিজনেরা এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে নার্সিংহোমের বাইরে। রোগীর পরিবারের সঙ্গে নার্সিং হোমে কর্মরত নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা দুর্ব্যবহার করে বলেও অভিযোগ। মৃতের পরিবারের দাবি, অবিলম্বে উপযুক্ত তদন্ত করে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিক পুলিশ প্রশাসন। এনিয়ে তাঁরা কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করতে গেলেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে, রোগীর পরিজনেরা জেলা পুলিশ সুপার’কে ইমেল করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, এবিষয়ে নার্সিংহোমের অন্যতম কর্ণধার ডাঃ কাঞ্চন ধাড়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি রোগী দেখতে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেওয়া হয়।