দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ মার্চ: পেট্রোপণ্য সহ লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি নীতি, জাতীয় শিক্ষানীতি’র বিরুদ্ধে দু’দিনের ধর্মঘট পালিত হচ্ছে দেশজুড়ে। কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী শ্রমিক সংগঠন, কৃষক সংগঠনের ডাকে বনধ হলেও প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন জানিয়েছে বাম দলগুলি। তবে, বনধের প্রথম দিন অর্থাৎ সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় যতখানি প্রভাব দেখা গেছে, আজ অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনে তা উধাও! যদিও, প্রথম দিনের পাওয়া ‘অক্সিজেন’ এ সতেজ হয়ে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় লালঝান্ডার দাপট দেখা গেল! জেলা শহর মেদিনীপুরের সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে হেড পোস্ট অফিস সর্বত্র জারিজুরি দেখানোর চেষ্টা চললো। তবে, নবান্নের নির্দেশেই প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন অনেক বেশি সক্রিয় ছিল পুলিশ। তাই, সরকারি বাস স্ট্যান্ড থেকে ৪ জন ধর্মঘটীকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পুলিশি প্রহরায় বাস স্ট্যান্ড থেকে বেরিয়েছে সরকারি বাসও। অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল সমর্থিত বাস পরিবহন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি পার্থসারথি ঘনা জানিয়েছেন, “প্রথম দিন ২-৪ টি বেসরকারি বাস চলেছে।‌ সেই তুলনায় আজ বিভিন্ন রুটে অন্তত ১৫-২০ টি বাস চলছে সকাল থেকে। তবে, দু’দিনই মালিকপক্ষকে জোর করা হয়নি।” তবে, কি বগটুই নিয়ে বেশ ব্যাকফুটে থাকা শাসকদল আসলে, কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী এই বনধে লালঝান্ডা-কে কিছুটা অক্সিজেনের যোগান দিয়ে, রাজ্যের প্রধান বিরোধী বিজেপি আর অন্যতম বিরোধী বামেদের মধ্যে আরও সুস্পষ্ট ভাগাভাগি করে, নিজেদের ঘরে ফায়দা তুলতে চাইছে? প্রশ্ন তুলছে সচেতন রাজনৈতিক মহল।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডে পুলিশি প্রহরা :

thebengalpost.net
পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি :

এদিকে, বনধের বেশিরভাগ দাবির প্রতি নৈতিক সমর্থন থাকলেও, পরপর দু’দিনের বনধে বিরক্ত বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ থেকে অফিসযাত্রী, ব্যবসায়ী সহ সকলেই! তাই, মঙ্গলবারের মেদিনীপুর শহর প্রথম দিনের তুলনায় অনেক বেশি ছন্দে! শুধু মেদিনীপুর নয়, খড়্গপুর থেকে কাঁথি কিংবা রাজ্য রাজধানী কলকাতা, সর্বত্র খোলা আছে স্কুল-কলেজ-অফিস-আদালত-দোকানপাট-বাজার; তার উপর নিজেদের কাজের জন্যই মঙ্গলবার অনেকবেশি সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। সরকারি বিধি মেনে রাজ্য সরকারের কর্মচারী,‌ শিক্ষকদের বেরোতেই হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, “দু’দিনের ক্ষতি পোষাবো কি করে! এমনিতেই সংসার চালানো দায় হয়ে যাচ্ছে। বনধ করলে কি আর দাম কমবে! আগেও বনধ হয়েছে, তাতেও পেট্রোপণ্য থেকে ওষুধ, সবকিছুর দামই হু হু করে বাড়ছে। তাই, শুধু শুধু দু’দিন দোকান বন্ধ করে কি লাভ!” তবে, ভাংচুরের ভয়ে বেসরকারি বাস একেবারেই হাতেগোনা চলছে। তুলনায় কম হলেও, নিত্য যাত্রীদের ভোগান্তি দ্বিতীয় দিনেও ছিল। তবে, রাজপথে রাজপথে লাল ঝাণ্ডার দাপট দেখা গেছে অনেকটাই! যা শুধু, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বামেদের পক্ষেই আশার আলো নয়, শাসকদল তৃণমূলের জন্যও আশাব্যঞ্জক। কারণ, প্রধান বিরোধী বিজেপির সঙ্গে বিরোধী ভোটের ভাগাভাগি নিয়ে এবার জোর লড়াই শুরু হতে চলেছে বামেদের, আর তার ফসল ঘরে তুলবে নিঃসন্দেহে শাসকদল!

thebengalpost.net
গ্রেফতার ধর্মঘটিরা :

thebengalpost.net
রাজপথে লালঝান্ডা :