দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১২ জুলাই:”নির্বাচনের পরও হিংসা সামলাতে পারেনি রাজ্য! এখনও কেন মানুষ মার খাচ্ছেন? যদি, রাজ্য তার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে সেটা উদ্বেগের। এই মামলার ভবিষ্যতের উপর বিজয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করবে। কমিশনকে সেটা মাথায় রাখতে হবে। নির্বাচন সংক্রান্ত সব নথি, সিসিটিভি ফুটেজ, ব্যালট, তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে কমিশনকে।” বুধবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা জনস্বার্থ মামলায় এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন দুপুরে শুভেন্দু অধিকারীর মামলা সহ পঞ্চায়েত নির্বাচনে চূড়ান্ত ‘অনিয়ম’ সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি হয়। সেখানে কমিশনের তরফে আজও কেউ উপস্থিত ছিলেন না! ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি টি.এস শিবজ্ঞানম বলেন, “আজকেও কমিশনের কেউ আদালতে নেই, তারা কেন সক্রিয় নয়? পুনর্নির্বাচনের বিষয়ে কমিশনের কাছে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী কী সিদ্ধান্ত, তা জানানো উচিত ছিল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে ফল ঘোষণার পরও রাজ্যে অশান্তি আটকাতে পারছে না কমিশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।”

thebengalpost.net
ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি :

প্রসঙ্গত, অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ভিডিও রেকর্ডিংও জমা দেওয়া হয়। দাবি জানানো হয় ৬ হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের। কিন্ত, সোমবার যে ৬৯৬ বুথে নতুন করে ভোটগ্রহণ হয়েছে, সেগুলি তাঁদের তালিকাতেই ছিল না বলে দাবি করে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে তাই সটান কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। সেই মামলাতেই বুধবার কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই অর্থাৎ ভোট ঘোষণার সময় থেকেই সমস্যা চলছে। ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে উল্লেখ করেছে তিনি। আইনজীবী জানিয়েছেন, শুধু হিংসার ঘটনাই নয়, ব্যালট নষ্ট করার ঘটনা ঘটেছে, এমন অনেক ছবি আছে। এরপরই আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কৈফিয়ত তলব করে যে উত্তরগুলি পাওয়া গিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলাকারীদের সব তথ্য আদালতে জমা দিতে হবে। আগামী ১৮ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, অশান্তি এবং পুননির্বাচনের দাবিতে বুধবার তিনটি নতুন জনস্বার্থ মামলা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং ফরহাদ মল্লিক। কমিশনের কোনও অফিসার বুধবারের শুনানিপর্বে আদালতে আসেননি। কমিশনের প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অসহযোগিতার বিষয় বিশেষভাবে কোর্ট দেখবে। কমিশনকে ‘পুনর্নিবাচন’ নিয়ে আবার দেখতে হবে। যে বুথগুলির (প্রায় ৬০০০ বুথে) প্রসঙ্গ মামলায় এসেছে, সেগুলি দেখতে হবে। যে ঘটনা ঘটেছে তার দায়িত্ব নিতে হবে কমিশনকে।