দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন: ২০০৮ এর পর ২০২৫। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরে। গত ১১ এপ্রিল বেশ ঘটা করেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি মেনে, গত ১৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রধান শিক্ষক হতে ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবেদনও জানান নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে। তারপর থেকেই আর এগোয়নি প্রক্রিয়া! এনিয়েই কার্যত হতাশ জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এই বিষয়েই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ (DPSC)-থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে আছে আদালতের নির্দেশের কারণেই! মিলন কুমার সিং সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষকের করা মামলাতে গত ২২ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন পরবর্তী শুনানি বা নির্দেশের আগে অবধি নিয়োগ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। আগামী ২৪ জুন পরবর্তী শুনানি হবে বলেও গত ২২মে-র নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি ভট্টাচার্য।

আদালত এবং ডিপিএসসি (DPSC) সূত্রে জানা গেছে, এই প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট বা স্ব-মূল্যায়নে (self appraisal/ self assessment) যে ৩০ নম্বর ধার্য করা হয়েছিল, তাতেই আপত্তি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মিলন কুমার সিং সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। শুনানিতে উঠে আসে, এই ধরনের নম্বর এবারই প্রথম দেওয়া হচ্ছে। এমন কোনও নির্দেশিকাও নেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। তা সত্ত্বেও কেন এই ধরনের নম্বরের ব্যবস্থা? প্রশ্ন তোলে আদালত। সংসদ বা ডিপিএসসি-র আইনজীবী অবশ্য জানান, এতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন সমস্যা হবে না। নিয়োগে সিনিয়রিটি বা অভিজ্ঞতাকেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। তা সত্ত্বেও এই বিষয়ে সব পক্ষের হলফনামা চেয়েছেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৪ জুন। ততদিন অবধি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান অনিমেষ দে বলেন, “সেলফ অ্যাসেসমেন্ট বা স্ব-মূল্যায়ন (self appraisal/ self assessment) নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কিছু শিক্ষক। আমাদের হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। আমরা আদালতের নির্দেশে হলফনাফা জমা করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই জট খুলে যাবে। তারপরই পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে।” উল্লেখ্য যে, ১৭ বছর পর প্রায় আড়াই হাজার শূন্যপদে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে এবার। স্বাভাবিকভাবেই সেই প্রক্রিয়া হঠাৎ থমকে যাওয়ায় চিন্তিত আবেদনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা।