thebengalpost.in
তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জুন: দেশ ও রাজ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিম্নমুখী! সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ কমছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত চব্বিশ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২৮৬ জন। উল্লেখ্য যে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ২২০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল, পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে মাত্র ২৮৬ জনের। পজিটিভিটি রেট মাত্র ১৩ (১২.৮১) শতাংশ! মাত্র ৩ দিন আগেও এই পজিটিভিটি রেট ২০ শতাংশের উপরে ছিল। এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের গত ৫ দিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে- ২৮ মে (শুক্রবার)- ৩২১ জন, ২৯ মে (শনিবার)- ৪০০ জন, ৩০ মে (রবিবার)- ৩৫৫ জন, ৩১ মে (সোমবার)- ৩১০ জন এবং ১ লা জুন- ২৮৬ জন। মোট ১৬৭২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এই পরিসংখ্যানই বলছে, জেলায় করোনা গ্রাফ বেশ কিছুটা নিম্নমুখী। এই পরিসংখ্যান স্বস্তিদায়ক হলেও, জেলা প্রশাসন তথা জেলার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘সচেতনতা’ অবলম্বন জরুরি। যেকোনো মুহূর্তে নতুন ঢেউ (তৃতীয় ঢেউ) আসতে পারে কিংবা সংক্রমণ ফের উর্ধ্বমুখি হতে পারে! তাই, জেলা প্রশাসন যেমন আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে, ঠিক তেমনই আগামী দিনগুলিতেও কঠোর কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অপরদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় জেলার করোনা হাসপাতাল গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। অন্যদিকে, জেলায় এই মুহূর্তে প্রতিদিন গড়ে সুস্থ হচ্ছেন ৪৫০ থেকে ৫০০ জন (গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৫০২) এবং সুস্থতার হার হল- প্রায় ৮৮.৫৫ শতাংশ। জেলার করোনা হাসপাতাল ও সেফ হোম গুলিতে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত সংখ্যক শয্যাও আছে বলে জানা গেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে।

thebengalpost.in
তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি :

এদিকে, গত ৫ দিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যে ১৬৭২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে মেদিনীপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকাতেই ৫০৬ জন। অর্থাৎ মোট করোনা সংক্রমিতের প্রায় ৩০ শতাংশই মেদিনীপুর এলাকার। ৩১ শে মে’র রিপোর্ট অনুযায়ী ১০২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন জেলা শহর মেদিনীপুর ও সংলগ্ন এলাকায়। ৩০ শে মে’র রিপোর্টে অনুযায়ী ৯০ জন, ২৯ মে’র রিপোর্ট অনুযায়ী ৯৫ জন এবং ২৮ শে মে’র রিপোর্ট অনুযায়ী ১১৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। অপরদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় জেলাজুড়ে ২৮৬ জন করোনা সংক্রমিতের মধ্যে শুধু জেলা সদর মেদিনীপুরেই ১০৩ জন জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ভয়াবহ গোষ্ঠী সংক্রমণ সহ সদর ব্লকে ২৫ জন করোনা সংক্রমিত। সদর ব্লকের গোপগড় ও নেপুরাতে ৬ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও, মালিয়াড়াতে ৩ জন, গুড়গুড়িপালে ৩, গোলাপীচকে ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। শহর মেদিনীপুরে ৬৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও, কোতোয়ালী থানার অধীনে বিভিন্ন এলাকায় আরও ১৫ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।

thebengalpost.in
দ্বিতীয় ঢেউ নিম্নমুখী :

অপরদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় খড়্গপুরে মোট ৪৬ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে, খড়্গপুর গ্রামীণে ১৬, রেল সূত্রে ৭, আইআইটি’তে ৪ এবং শহরে ১৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শালবনীতে মোট ১৪ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এর মধ্যে, শালবনী এলাকায় ৪ জন, লালেরডিহিতে ৫ জন, মালিদায় ২ জন, পিড়াকাটায় ২ জন, মেটালে ১ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। অন্যদিকে, তার আগের ৪ দিনেও শালবনীতে গড়ে ১৫ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। ২৯ তারিখের রিপোর্ট অনুযায়ী পুনরায় বিআরবি থেকে ৫ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে এবং সারসবেদিয়া গ্রামে গোষ্ঠী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। গড়বেতার ৩ টি ব্লক মিলিয়ে মোট ২১ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এর মধ্যে, গড়বেতা ১ নং ব্লকের গড়বেতা, ফতেসিংপুর, কাষ্ঠগোড়া সহ ১১ জন; ২ নং ব্লকের গোয়ালতোড়, কিয়ামাচা, কাদোশোল, পাথরপাড়া, বুলানপুর সহ ৮ জন এবং ৩ নং ব্লকের কিয়াবনী ও নয়াবসত এলাকায় ২ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। গত ৪ দিনে গড়বেতার ৩ টি ব্লকে গড়ে ৩০ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। দাঁতনে ৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে গত চব্বিশ ঘণ্টায়। বেলদা-নারায়ণগড়ের তুতরাঙা (৩), টালা (২), বেলদা, প্রহরাজপুর, চক মকরামপুর, বড় মাতকাতপুর, ফুলগেড়িয়া প্রভৃতি এলাকা সহ ১৪ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। অপরদিকে, পিংলায় ৪ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এর মধ্যে, গোবর্ধনপুরের ২ জন, রাগপুর ও ধোনিচকের ১ জন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ডেবরা, সবংয়ে কেউ করোনা সংক্রমিত না হলেও (বা, টেস্ট না হলেও), তার আগের চারদিনে স্বল্প সংখ্যক করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ঘাটাল মহকুমায় ৪৭ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সংক্রমণের হার ঘাটাল মহকুমাতেও নিম্নমুখী।