Education

ICSE Result: ICSE তে রাজ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে অদ্রিজা এবং ঈশিতা! প্রথম পাঁচে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের চার ‘কন্যারত্ন’

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুলাই: মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের পর এবার ICSE (Indian Certificate of Secondary Education)-তেও নজরকাড়া সাফল্য পশ্চিম মেদিনীপুরের। রাজ্যে প্রথম পাঁচে মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের চারজন। উল্লেখযোগ্য ভাবে, চারজন-ই ছাত্রী। রাজ্যে তৃতীয় (এবং, জাতীয় স্তরে চতুর্থ) হয়েছেন খড়্গপুর সেন্ট অ্যাগনেস (St. Agnes School, Kharagpur) স্কুলের ছাত্রী তথা মেদিনীপুর শহরের নজরগঞ্জের বাসিন্দা অদ্রিজা পড়্যা। অদ্রিজা’র প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬ (৫০০’র মধ্যে)। ৯৯.২ শতাংশ নম্বর রাজ্যের মেধাতালিকায় অদ্রিজা সহ ৩৩ জন জায়গা করে নিয়েছেন। অপরদিকে, রাজ্যে চতুর্থ (জাতীয় স্তরে পঞ্চম) হয়েছেন মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে অবস্থিত বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতন (VSN- Vidyasagar Shishu Niketan)-এর ঈশিতা পন্ডা। ঈশিতা’র প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫। ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ স্থানে আছেন ঈশিতা সহ ৫২ জন। এছাড়াও, রাজ্যে পঞ্চম স্থানে আছেন খড়্গপুর সেন্ট অ্যাগনেস স্কুলের আরও দুই ছাত্রী, যথাক্রমে- অস্মিতা বিষই এবং স্বস্তিকা দাস। দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪ (৯৮.৮ শতাংশ)।

অদ্রিজা’র হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা পত্র তুলে দিলেন AI মানস সামন্ত:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা পত্র:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ফল ঘোষণা করে, কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশনস (সিআইএসসিই/ CISCE)। CISCE বোর্ডের অধীন ICSE (দশম শ্রেণী) পরীক্ষার ফলাফলে, ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৯ পেয়ে প্রথম হয়েছেন চার জন। প্রথম স্থানাধিকারীদের প্রাপ্ত নম্বরের হার ৯৯.৮০ শতাংশ। ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৮ পেয়ে রাজ্য থেকে প্রথম (জাতীয় স্তরে দ্বিতীয়) হয়েছেন ৯ জন পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ছাত্র এবং তিন জন ছাত্রী। এ রাজ্যে প্রথম স্থানাধিকারীদের মধ্যে চার জন কলকাতার। রাজ্যে দ্বিতীয় (জাতীয় স্তরে তৃতীয়) স্থানেও আছেন ৯ জন‌ পড়ুয়া। গোটা দেশের মেধা তালিকায় তাই প্রথম তিনে এ রাজ্যের ১৮ পড়ুয়া আছেন। জাতীয় স্তরে চতুর্থ স্থানে আছছন এ রাজ্যের ৩৩ জন পড়ুয়া এবং পঞ্চম স্থানে আছেন ৫২ জন পড়ুয়া। চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আইসিএসই (ICSE) বা দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৪০ হাজার ৭৩৬ জন। পাশের হার প্রায় ৯৯.৯৮ শতাংশ। ছেলেদের পাশের হার ৯৯.৯৭ শতাংশ। মেয়েদের পাশের হার ৯৯.৯৮ শতাংশ। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাশের হার সামান্য বেশি!

জেলা বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে অদ্রিজা-কে দেওয়া হল সংবর্ধনা, পাশে বাবা (বিশ্বজিৎ পড়িয়া) এবং দিদিমা:

এদিকে, আইসিএসসি’র ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরই দেখা যায় নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে খড়্গপুরের সেন্ট অ্যাগনেস স্কুল এবং মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতন। সেন্ট অ্যাগনেস তথা মেদিনীপুর-খড়্গপুর’কে গর্বিত করে রাজ্যে তৃতীয় (দেশে চতুর্থ) স্থান দখল করেছেন মেদিনীপুরের নজরগঞ্জের মেয়ে অদ্রিজা পড়্যা। সোমবার দুপুরে অদ্রিজা’র বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রেরিত শুভেচ্ছা পত্র পৌঁছে দিয়েছেন স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অদ্রিজা’র বাবা বিশ্বজিৎ পড়্যা তাঁতিগেড়িয়া ১ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (TIC) এবং একজন হোমিওপ্যাথি (BHMS) চিকিৎসক। মা অর্পিতা পড়্যা খড়্গপুর শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত গোপালী ইন্দ্রনারায়ণ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। পদার্থবিদ্যা বিষয়ের শিক্ষিকা অর্পিতা দেবী-ই মূলত মেয়ে অদ্রিজা-কে ছোটো থেকে পড়িয়েছেন বা গাইড করেছেন। পড়াশোনার সাথে সাথে দাবা এবং অঙ্কনেও পটু অদ্রিজা। দাবা প্রতিযোগিতায় জেলা স্তরে বিভিন্ন সময়ে সাফল্য অর্জন করেছেন অদ্রিজা। বাবা বিশ্বজিৎ পড়্যা জানিয়েছেন, “ওর মা-ই ওর পড়াশোনার বিষয়টা দেখতেন। গৃহ শিক্ষক তেমনভাবে ছিলেন না। ছোটো থেকেই ও সেন্ট অ্যাগনেস স্কুলে পড়াশোনা করেছে। ওর এই সাফল্যের পেছনে স্কুলের অবদান-ও অনস্বীকার্য।” অদ্রিজা ছাড়াও, সেন্ট অ্যাগনেস স্কুলের আরও দুই ছাত্রী যথাক্রমে-অস্মিতা বিষই এবং স্বস্তিকা দাস, রাজ্যের মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন। এদিকে, মেদিনীপুর শহরের বিদ্যা শিশু নিকেতনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যালয়ের ১৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৪ জন এবার ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন। এর মধ্যে, ২৭ জন‌ পেয়েছেন ৯৫ শতাংশের বেশি নম্বর। সর্বোচ্চ, ঈশিতা পন্ডা (৯৯ শতাংশ নম্বর) রাজ্যে চতুর্থ এবং সারা দেশে পঞ্চম স্থানে আছেন। এরপর যথাক্রমে- জয়দেব সরকার (৯৮.৪ শতাংশ); সৌমিলি দাস (৯৮.৪ শতাংশ) এবং অন্বেষক জানা (৯৮.২ শতাংশ) প্রমুখ ভালো ফলাফল করেছেন। মেদিনীপুর শহরের রয়্যাল অ্যাকাডেমি স্কুলের (Royal Academy School) ২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জন ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন। সর্বোচ্চ ৯৮.৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন রঙিন দাস এবং ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন ঐশিক পাত্র। দু’টি স্কুলেরই সকল পরীক্ষার্থী পাস করেছেন বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষার সঙ্গে ঈশিতা পন্ডা:

সৌমিলি দাস :

News Desk

Recent Posts

Vidyasagar University: আবহাওয়ার নিখুঁত খবর জানতে ISRO-র সহযোগিতায় আকাশে যন্ত্র লাগানো বেলুন পাঠাল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জুন: রবিবার (২২ জুন) দুপুর ঠিক ২টো ১…

1 day ago

Midnapore: “১৯৭৮-এর পর এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি গড়বেতা!” আসরে NDRF-SDRF; প্লাবন পরিস্থিতি চন্দ্রকোনাতেও

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ জুন: ১৯৭৮ সালের পর এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির…

4 days ago

Midnapore: মিয়াজাকি, ব্ল্যাকস্টোন থেকে আম্রপালি, হিমসাগর; মেদিনীপুরে জমজমাট ‘আম উৎসব’

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুন: ৩০ টাকা প্রতি কেজি থেকে ৩ লক্ষ…

6 days ago

Kharagpur: খড়্গপুরের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ! মৃত্যু এক শ্রমিকের

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৭ জুন: গ্লিসারিন কারখানায় ওয়েল্ডিং- এর কাজ চলাকালীন ভয়াবহ বিস্ফোরণ!…

1 week ago

Midnapore: প্রায় দু’দশক পরে পশ্চিম মেদিনীপুরে শুরু হয়েছিল প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া; থমকে গেল আদালতের নির্দেশে

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন: ২০০৮ এর পর ২০২৫। দীর্ঘ প্রায় দুই…

1 week ago

Elephant: হাতির পালকে তাক করে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর এক জ্বলন্ত হুলা; নেটমাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঢল

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৩ জুন: হাতির পালকে তাক করে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর…

2 weeks ago