দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ নভেম্বর: ২০ মাসের অচলাবস্থা কাটিয়ে চেনা ছন্দে ফিরল রাজ্যের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তার সাথে সাথেই সেই চেনা ছন্দে দেখা গেল শিক্ষা ও সংস্কৃতির শহর মেদিনীপুরকেও! দীর্ঘ প্রায় দু’বছর পরে মেদিনীপুর শহরের রাজপথ পড়ুয়াদের আনাগোনায় মেতে উঠল। তবে, জেলা শহরের স্কুলগুলিতে প্রথম দিনের গড় উপস্থিতি ছিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে। প্রবেশ পথে ছিল, থার্মাল চেকিং থেকে শুরু করে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা। একসাথে প্রার্থনা-পর্ব অনুষ্ঠিত হয়নি। শ্রেণিকক্ষে হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বেঞ্চে সর্বাধিক ২ জন করে শিক্ষার্থীকে বসানো হয়েছিল। সম্পূর্ণভাবে কোভিড বিধি পালন করে ক্লাস হয়। মেদিনীপুর টাউন স্কুল (বালক) এর প্রধান শিক্ষক ড. বিবেকানন্দ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “প্রথম দিনের গড় উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।” তবে, বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালক) এর প্রধান শিক্ষক অরূপ কুমার ভূঁইয়া জানান, “৬০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল উপস্থিতি।” মেদিনীপুর শহরের অন্যান্য স্কুলগুলির তরফেও জানা গেছে প্রথম দিনের উপস্থিতির হার ছিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যেই। তবে, প্রধান শিক্ষকরা আশা প্রকাশ করেছেন, আগামীদিনে বাড়বে উপস্থিতির হার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মেদিনীপুর টাউন স্কুল সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এদিন ফুল ও চকলেট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। অপরদিকে, মেদিনীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুল ও কলম।

thebengalpost.net
ভাদুতলা বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় :

thebengalpost.net
মেদিনীপুর টাউন স্কুলের ছাত্রদের বরণ করে নেওয়া হল চকলেট উপহার বিয়ে :

অন্যদিকে, উপস্থিতির হারে জেলা শহরের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে গ্রামগঞ্জের স্কুলগুলি। এর অন্যতম কারণ অবশ্য, প্রথম দিন বলেই অনেকে যায়নি। আগামীকাল অথবা আগামী সপ্তাহ থেকেই উপস্থিতির হার বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শালবনী ব্লকের ভাদুতলা বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. অমিতেশ চৌধুরী জানিয়েছেন, “প্রথম দিনের উপস্থিতি ছিল ৪০ (চল্লিশ) শতাংশের কাছাকাছি। আর একটু বেশি আশা করেছিলাম। তবে, উপস্থিতির হার ধীরে ধীরে বাড়বে বলে আমাদের মনে হয়।” বেশ কিছু স্কুলে উপস্থিতির হার আরো কম ছিল। তবে, সমস্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই খুশি, তাঁদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ফের পড়ুয়াদের কলতানে মুখরিত হওয়ায়! অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামের ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের চিত্রটা আবার সম্পূর্ণ অন্যরকম! প্রধান শিক্ষিকা অরুন্ধতী সেন জানিয়েছেন, “একাদশ ও দ্বাদশের উপস্থিতি ছিল আশাব্যঞ্জক। বিজ্ঞান বিভাগে প্রায় ৯০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। কলা ও বাণিজ্য বিভাগে উপস্থিতি ছিল ৬০-৭০ শতাংশের মতো। তবে, নবম-দশমের উপস্থিতি ছিল অনেকটাই কম।” এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “নবম-দশমের সিলেবাস প্রায় শেষের মুখে, তাই হয়তো বিশেষ গুরুত্ব দেননি অভিভাবকরা।” তবে, তিনিও আশাবাদী আগামীদিনে উপস্থিতির হার আরো বাড়বে। অন্যদিকে, মেদিনীপুর কলেজ কিংবা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিনই উপস্থিতির হার ছিল ৯০ শতাংশের কাছাকাছি! এর, অন্যতম কারণ অবশ্যই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রায় একশো শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া। এমনটাই অভিমত, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরও। মেদিনীপুর পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপারসন সৌমেন খান থেকে শুরু করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, সকলেই পড়ুয়াদের এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। শ্যাম বাবু জানিয়েছেন, “জেলার ডেঙ্গু ও করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। আশা করছি ভয় কেটে গেছে, ফের চেনা ছন্দে ফিরতে চলেছে আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণগুলি।”

thebengalpost.net
বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে কোভিড পাঠ :

thebengalpost.net
দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস :

thebengalpost.net
মেদিনীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুল ও কলম :

thebengalpost.net
স্কুল ছুটির পর চেনা ছন্দে মেদিনীপুর শহর :