দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ মে: মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকাতেও জায়গা করে নিল জেলা শহর মেদিনীপুরের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র বীরেশ ঘোষ। মাধ্যমিকে ‘দশম’ স্থান অধিকার করায় খুশি হতে পারেনি বীরেশ। খুশি ছিলেন না তার বাবা-মাও। তবে, এবার খুশি! উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯৩ নম্বর সহ পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে বীরেশ। বীরেশ জানায়, “৪৯৩-৪৯৪’ই ভেবেছিলাম। ঠিকই আছে। আমি খুশি।” মেদিনীপুর শহরের পালবাড়ি এলাকায় বাড়ি বীরেশের। বাবা গৌতম ঘোষ পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। মা পম্পা ঘোষ গৃহবধূ।

thebengalpost.net
মা’র সাথে বীরেশ:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

তবে, ছেলের পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাঁদের বিশেষ সাহায্য করতে হয়নি বলেই জানান বাবা-মা। গৃহশিক্ষকও দিতে হয়নি। বীরেশ ‘সেল্ফ স্টাডি’-তেই স্বচ্ছন্দ ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং বা যেকোনো টেকনিক্যাল লাইনে যেতে চায় বীরেশ। জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্স দিয়ে আইআইটি-তে পড়ার ইচ্ছেও রয়েছে। না হলে দেশের অন্য কোন নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রযুক্তিগত যে কোন বিষয় নিয়ে পড়তে চায় সে। তবে কোনভাবেই মেডিক্যাল লাইনে যেতে চায় না বীরেশ। বীরেশ জানায়, “পদার্থবিদ্যা আমার প্রিয় বিষয়। তাই, পদার্থবিদ্যা ও গণিত আছে এমন কোন টেকনিক্যাল লাইনেই যেতে চাই। সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে বা অন্য কিছু।” বীরেশ বলে, “যেহেতু আমি সেল্ফ স্টাডি করতাম, তাই ১০-১২ ঘন্টা পড়তে হতো। বাকি যে যার মত করে পড়লেই হবে।” সারা বছর গৃহশিক্ষক না থাকলেও, উচ্চমাধ্যমিকের মাস তিনেক আগে কেমিস্ট্রি এবং বাংলা-ইংরেজি’র জন্য তিনজন গৃহশিক্ষকের সাহায্য নিয়েছিল বলে জানায় বীরেশ। বীরেশ জানায়, “মূলত বাড়িতে বারবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এবং কেমিস্ট্রিতে ছোটখাটো কিছু সমস্যা থাকার কারণে শেষ তিন মাস গৃহ শিক্ষকের সাহায্য নিয়েছিলাম। তবে, স্কুলের শিক্ষকদেরও সাহায্য পেয়েছি।” বীরেশের বাবা-মা বলেন, “ছেলে নিজের মতো করেই পড়াশোনা করেছে। ও যে লাইনে যেতে চাইবে, আমরা তাতেই খুশি।”

thebengalpost.net
সাগ্নিক ও সৌম্যসুন্দর (ডান দিকে):

পড়াশোনার বাইরে গত ৮ বছর ধরে মেদিনীপুর সুইমিং ক্লাবের সাথে যুক্ত বীরেশ। একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত খেলাধুলাও করেছে সে। ছাত্রকে নিয়ে গর্বিত রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবন, মেদিনীপুরের প্রধান শিক্ষক স্বামী দিব্যনিষ্ঠানন্দ মহারাজ। তিনি বলেন, “আমরা আপ্লুত! আমাদের প্রতিষ্ঠান এবং নিজের বাবা-মাকে গর্বিত করেছে বীরেশ। মাধ্যমিকেও ও দশম স্থানে ছিল। ওর আরো সাফল্য কামনা করি। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলব, শিক্ষাটা যেভাবে বাণিজ্যিক হয়ে যাচ্ছে, তা না হওয়াই শ্রেয়! আমরা যাঁরা রামকৃষ্ণ মিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছি, তাঁরা সবসময়ই চাইব শিক্ষা ব্যবস্থাটা স্কুলমুখীই থাকুক, বাণিজ্যিক না হোক!” রামকৃষ্ণ মিশনের বীরেশ ছাড়াও মেধাতালিকায় এবার জায়গা করে নিয়েছে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের দুই ছাত্র, যথাক্রমে সৌম্যসুন্দর রায় (নবম, ৪৮৯) ও সাগ্নিক পাত্র (দশম, ৪৮৮)। বীরেশের মতো তারাও জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্স দিয়ে আইআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় বলে জানিয়েছে।

thebengalpost.net
রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবন, মেদিনীপুর:

thebengalpost.net
স্বামী দিব্যনিষ্ঠানন্দ মহারাজ: