দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ২১ জুন: “নির্বাচন কমিশনার যদি না চাপ সামলাতে না পারেন, তা হলে ছেড়ে দিন! রাজ্যপালের কাছে যান। তিনি অন্য কাউকে নিয়ে আসবেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। এখান থেকে এগুলো আশা করা যায় না। এত ঘটনার পরে কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করতে হলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক!” বুধবার ঠিক এভাবেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা-কে ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচারপতি টি.এস শিবজ্ঞানম। তিনি এও বলেন, “বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, এত কিছুর পরেও কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। হাই কোর্টের অর্ডার পালন করুন।’’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একের পর এক মামলায় ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এবার খোদ নির্বাচন কমিশনারকেই কড়া বার্তা দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি.এস শিবজ্ঞানম। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি এদিন কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সব জেলায় পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে বলেছিল আদালত। কিন্তু আট লাখ ভোটারের জন্য ১৭০০ আধা সেনা! আমি বলেছিলাম, রাজ্যের সব জেলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে। বলেছিলাম, সময় যত গড়াবে ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়বে। তাই দেরি না করে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশকে কার্যকর করার কথা মনেই করেনি কমিশন।’’

thebengalpost.net
ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি:

এরপরই, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথা বিজেপির তরফে করা একটি মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, কত বাহিনী আনতে হবে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি আদালতকে জানিয়েছিল, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল রাজ্যে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেছেন, এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার জন্যও ওই সংখ্যক বা তার বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কমিশন ২২টি জেলার জন্য যে ২২ কোম্পানি অর্থাৎ ২০০০-এর মতো আধা সেনা মোতায়েনের কথা বলেছে, তা করলে চলবে না। প্রধান বিচারপতি এও বলেন, “চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।” উল্লেখ্য যে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ মামলা হয় হাইকোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি কড়া ভাষায় বার্তা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে।

অন্যদিকে, বিচারপতি অমৃতা সিনার এজলাসে বিরোধীদের করা একটি মামলায় বিচারপতি সিনহা বলেন, “একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বা অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” একইসঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অশান্তির জন্য যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া উচিত কমিশনের। আদালত জানিয়েছে, ভাঙড়ে ISF’র ২ জন এবং সিপিএমের ১৯ জন প্রার্থী সুযোগ পাবেন ভোটে লড়ার।