মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ এপ্রিল:বুকে যাঁর ‘অজেয় পৌরুষ’ বিবেকানন্দ, শক্তি যাঁর জীবে প্রেম; কোনো লক্ষ্যপূরণই বোধহয় তাঁর কাছে বাধা হতে পারেনা! ‘পরিবেশ রক্ষা’ তথা সবুজায়নের বার্তা নিয়ে তাই পুরুলিয়ার অক্ষয় নিজের সাইকেলকেই বাহন করে বেরিয়ে পড়েছেন বিশ্বভ্রমণে। তাঁর স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য, বিশ্বের প্রতিটি দেশে একটি করে সবুজ চারা গাছ রোপণ করে সঙ্কটে ভোগা পরিবেশ-কে সবুজ সজীবতায় ভরিয়ে তোলার বার্তা দেওয়া। সেই লক্ষ্যে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার বুড়দা গ্রাম থেকে বেরিয়ে পড়েছেন অক্ষয় ভগত (Akshay Bhagat)। পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম হয়ে, বুধবার (৫ এপ্রিল) পৌঁছেছেন ‘মিনি ইন্ডিয়া’ হিসেবে খ্যাত পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। আগামী ৫ থেকে ৭ বছর ধরে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকার প্রতিটি দেশ ছুঁয়ে যাওয়াই লক্ষ্য অক্ষয়ের। প্রতিটি দেশে একটি করে সবুজ চারা গাছ রোপণ করে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দেবেন অক্ষয়। তবে, নিতান্তই সাধারণ পরিবারের একমাত্র ছেলে (দুই দিদি ও এক বোন আছে) অক্ষয়ের একমাত্র সমস্যা এখন অর্থের জোগান শেষ হয়ে আসা। সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠে, কলকাতা-দিল্লি হয়ে আফ্রিকার ইজিপ্ট দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়াই আপাতত লক্ষ্য তাঁর।

thebengalpost.net
অক্ষয় ভগত (Akshay Bhagat) :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২৪ বছর বয়সী অক্ষয় এর আগেও সাইকেলে করে দেশ ভ্রমণ করেছেন। ২০১৮ সালে, যখন তাঁর বয়স মাত্র ২০, সেই সময়ই ‘বাল্যবিবাহ রোধ’ এর বার্তা নিয়ে ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্য ছুঁয়েছেন। একবছরের সেই যাত্রাই এবার তাঁকে বিশ্বভ্রমণের অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। আগামী ৫-৭ বছর ধরে বিশ্বের প্রতিটি দেশ ভ্রমণ করাই লক্ষ্য ‘লাল পলাশের দেশ’ পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের এই বীর সন্তানের। অক্ষয়ের বাবা ভুবনেশ্বর ভগত রাঁচিতে একটি দোকানে কাজ করেন। মা আশা ভগত গৃহবধূ। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা-মা ছাড়াও, বাড়িতে আছে ছোটো বোন। আর্থিক অনটনের কারণে, মাধ্যমিকের পর অক্ষয়ের আর পড়াশোনা করা হয়নি। যুবক অক্ষয়ের পেশা সাইকেলে করে দুধ আর পেপার বিক্রি করা। তবে, নেশা হল ‘মহান উদ্দেশ্য’-কে সঙ্গী করে, নিজের সাইকেল নিয়ে পৃথিবীর পথে পাড়ি দেওয়া। তাঁর ‘আদর্শ’ অজেয় পৌরুষ এর প্রতীক ‘বিশ্বসন্যাসী’ স্বামী বিবেকানন্দ। খড়্গপুরের বুকে দাঁড়িয়ে শুক্রবার সকালে অক্ষয় জানিয়েছেন, “স্বামী বিবেকানন্দ যদি পায়ে হেঁটে বিশ্ব ভ্রমণ করতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না! তবে, অর্থের জোগান আপাতত শেষ হয়ে এসেছে। তাই, সময় একটু বেশি লাগছে। বিভিন্ন ভাবে আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করছি। ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খড়্গপুর থেকেও আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছি। আশা করছি, আজ বা আগামীকালের মধ্যে খড়্গপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারব।” ‘অক্ষয়’ স্বপ্ন নিয়ে এভাবেই এগিয়ে চলুন জঙ্গলমহলের অক্ষয়, চাইছেন আপামর মেদিনীপুরবাসী!

thebengalpost.net
খড়্গপুরে অক্ষয় :

thebengalpost.net
এগিয়ে চলুন অক্ষয়, চাইছে মেদিনীপুর :