দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেট্রোলজিক্যাল পার্ক তথা আবহাওয়া দপ্তর বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ জানিয়েছে, জেলা শহর মেদিনীপুরে গত ১৯ ঘন্টায় (মঙ্গলবার রাত্রি ১২ টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত) বৃষ্টি হয়েছে ১৬৩ (১৬২.৫৬) মিলিমিটার। পুরো চব্বিশ ঘণ্টা ধরলে প্রায় ২০০ মিমি। এর মধ্যে, বিজ্ঞাপন বেলা ১১ টার পর থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বৃষ্টি প্রায় ধরে গিয়েছিল। সেই হিসেবে শুধুমাত্র সারা রাত ধরে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ! আর, সেই বৃষ্টিতেই ফের প্লাবিত মেদিনীপুর-খড়্গপুর থেকে শুরু করে ঘাটাল-কেশপুর-সবং-পিংলা-নারায়ণগড়। জলমগ্ন জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য সড়ক। গ্রামীণ রাস্তা থেকে শুরু করে শহরের অলিতে গলিতে এক হাঁটু করে জল। জেলা শহর মেদিনীপুরের উপকন্ঠে ৬০ নং জাতীয় সড়কের উপর ধর্মা এলাকাতেও পুকুর সমান জল। বড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও, সাইকেল-বাইক নিয়ে অনেকেই পড়ে গেলেন। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করল বড় বড় গাড়ি ঘোড়াগুলি। ফের একবার চরম জল যন্ত্রণায়, ধর্মা সংলগ্ন রামকৃষ্ণ নগর, বিবেকানন্দ পল্লী, সূর্যনগর প্রভৃতি এলাকা। শহরের পালবাড়ি, চাষিপাড়া, মহতাবপুর প্রভৃতি এলাকাগুলো জলমগ্ন। রেল স্টেশন সহ পুরো খড়্গপুর শহর ফের একবার জলের তলায়! যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বললেন, “শাসকদল কোনো কাজই করেনি!” পৌর প্রশাসক প্রদীপ সরকার বললেন, “সবই রেলের জল!”
এদিকে, দেওয়াল চাপা জেলায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। চন্দ্রকোনা টাউন থানার করঞ্জি এলাকায় প্রতিমা বাগ বাগ নামে বছর ৪০ এর এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। অন্যদিকে, দেওয়াল চাপা পড়ে আহত হয়েছে এক কিশোর। চন্দ্রকোনা রোডের (গড়বেতা- ৩) নবকোলা এলাকায় বুধবার সকালে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই কিশোরকে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, কেশপুর থেকে শালবনী, মেদিনীপুর সদর থেকে সবং ভেঙে পড়েছে একাধিক মাটির বাড়ি। উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। বাড়িতে বাড়িতে এক হাঁটু জল। জল দুর্যোগে বিপর্যস্ত সবং-পিংলা-কেশপুর-ঘাটাল-নারায়ণগড় নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে প্রশাসনের কপালে। যদিও আগামীকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে বলে জানা গেছে।