দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জানুয়ারি: জঙ্গলমহলের ট্র্যাডিশনাল মাংসের পিঠে থেকে সাবেকি পিঠেপুলি, ক্ষীরের পাটিসাপটা কিংবা গাজরের হালুয়া। এই সময়ের জনপ্রিয় মোমো, দইবড়া, প্যাটিশ কিংবা পোলাও। আবার নলিনী, গাজরের কালাকাঁদ, ক্যারট ডিলাইট, নিউট্রি পাওয়ারের মতো সব ট্রেন্ডি বা ফিউশন খাবার-দাবার। কি ছিলো না জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের উপকন্ঠে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ফেস্টিভ্যালে। বলাই বাহুল্য, প্রতিটি খাবারদাবারের দামও ছিল সাধ্যের মধ্যে। সমস্ত খাবারের দামই ধার্য করা হয় ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। ছাত্রছাত্রী থেকে প্রাক্তনী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, অতিথিরা জমিয়ে খেলেন বিভিন্ন খাবার-দাবার।

thebengalpost.net
ফুড ফেস্টিভ্যালে:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনকিউবেশন সেন্টারের উদ্যোগে মঙ্গলবার মহাসাড়ম্বরে আয়োজিত হয় দ্বিতীয় ফুড ফেস্টিভ্যাল। প্রথম বছর সাফল্য পাওয়ার পর পড়ুয়াদের আরো উৎসাহিত করতে, এবারও এই উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান সেন্টারের ইনচার্জ তথা রসায়ন বিভাগের বরিষ্ঠ অধ্যাপক ড. ব্রজগোপাল বাগ। তিনি এও বলেন, পড়াশোনার সাথে সাথেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ এবং ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সকলেমিলে এক শীতের দুপুরে খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গানের মধ্য দিয়ে মিলিত হওয়াই এই ফুড ফেস্টিভ্যালের উদ্দেশ্য। সবমিলিয়ে, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীন ক্যাম্পাসে এক শান্তিনিকেতনীয় পরিবেশের মধ্যে মঙ্গলবার মেতে উঠেছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী থেকে গবেষকরা।

thebengalpost.net
ছাত্রছাত্রীদের ফুড স্টল:

এদিন, নিউট্রেশন বা পুষ্টিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ড. সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে স্বাগতা পাল, চিন্ময়ী দাস, সুদীপা মণ্ডল, সমীরণ মিদ্যা, শুভম দাস, স্বীকৃতি কুন্ডুরা তৈরি করেছিল পুষ্টিকর ও আধুনিক সব খাবার দাবার। নলেন গুড়, চাল, দুধ, কেশর দিয়ে তারা তৈরি করে নলিনী। কোভিডের পর ফের নতুন ভাইরাস-আতঙ্কের আবহে তারা তৈরি করে চা বিহীন চা অর্থাৎ ‘অ্যান্টি অক্সিডেন্ট টি’। লবঙ্গ, এলাচ, তুলসী পাতা, আদা, দারচিনি দিয়ে এই চা তৈরী হয়েছে বলে জানায় স্বাগতা, চিন্ময়ীরা। বাঁকুড়ার রাম গরাই, পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষ্ণ সরেন, বরুণ কুমার ঘাঁটি, সঞ্জয় সরেন, শুভদীপ দে-রা থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে (হোস্টেলে)। তারা তৈরি করেছিল জঙ্গলমহলের বিখ্যাত মাংসের পিঠে।

thebengalpost.net
রকমারি খাবার:

হিন্দি বিভাগের খুশি সিং, লক্ষ্মী যাদব, অদিতি শর্মারা আসে ‘মিনি ইন্ডয়া’ খড়্গপুর থেকে। তারা বানিয়েছিল মাক্কা কি রোটি, মিঠা পরাঠা, মিঠা পোলাওয়ের মতো জিভে জল আনা সব খাবার-দাবার। যা খেতে হয়, সর্ষের শাক কিংবা ধনিয়া কি চাটনি দিয়ে। রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ব্রজগোপাল বাগের পরামর্শে ছাত্রছাত্রীরা তৈরি করে স্বাস্থ্যকর টমেটো সস, অরেঞ্জ জেলি, চিলি সস, গুয়াভা জেলি। চুসির পায়েস, গাজরের কালাকাঁদ, মালপোয়া, ক্ষীরের পাটিসাপটা নিয়ে বসেছিলেন পদার্থবিদ্যার দূরশিক্ষার বিভাগের অধ্যাপক ড. দিব্যেন্দু চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “পায়েস, মালপোয়া আর পাটিসাপটা বসার এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ!” আবার, নৃতত্ত্ব বিভাগের স্বাগতা সিংহ, বন্দিতা জানা, নুর নাসেহা খাতুনরা তৈরি করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের ট্র্যাডিশনাল গহনা বড়ি। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর অবধি জেগে, নিজেদের মেসে, হোস্টেলে কিংবা বাড়িতে তারা নিজেরাই এই সমস্ত খাবার-দাবার তৈরি করেছে। তবে, মঙ্গলবার দিনভর তারা যেভাবে খেয়ে আর খাইয়ে আনন্দ পেয়েছে, তাতে তাদের সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে বলেও জানায় সুদীপা, সমীরণ, শুভম, স্বীকৃতিরা।

thebengalpost.net
সেলফির আনন্দে:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):