দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ এপ্রিল: জঙ্গলমহল এলাকায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে আদিবাসীদের শিকার উৎসব। তবে, সবথেকে বড় ‘শিকার উৎসব’ আছে আগামী ৩ এপ্রিল। মেদিনীপুর ডিভিশনের মেদিনীপুর রেঞ্জের গোপগড় বিটের জামশোলের জঙ্গলে এই শিকার উৎসব পালন করবেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। আপাতত সেই শিকার উৎসবই ‘রক্তপাতহীন’ করার বড় চ্যালেঞ্জ বনদপ্তরের কাছে। তবে শুধু জামশোল শিকার উৎসবই নয়, জঙ্গলমহলের সমস্ত শিকার উৎসবগুলোই যাতে রক্তপাতহীন হয়; সেই লক্ষ্যেই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বনদপ্তর। ইতিমধ্যেই, জঙ্গলমহলের কয়েক হাজার পিকাপ ভ্যানকে চিহ্নিত করে বনদপ্তরের স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ির নম্বর এবং মালিকের ফোন নম্বরও নেওয়া হয়েছে। শিকার উৎসবে কোন ভাবেই ওই সমস্ত গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বনদপ্তর। নির্দেশ অমান্য করলেই নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ।

thebengalpost.net
র‌্যালি:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

এছাড়াও, বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকও করা হয়েছে প্রতিবছরের মতো। আদিবাসী সমাজের মোড়লদেরও বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘রক্তপাতহীন’ শিকার উৎসব পালন করার জন্য। বন্যপ্রাণী হত্যা রুখে দেওয়া বার্তা দিয়ে মঙ্গলবার মেদিনীপুর ডিভিশনের বনকর্মীরা সুবিশাল এক বাইক র‍্যালিরও আয়োজন করেন। বাইকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার ভ্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের ‘অরণ্য শাখা’র কর্মীরা। মেদিনীপুর শহরের ডিভিশনাল কার্যালয় থেকে সদর ব্লকের চাঁদড়া ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় ঘুরে আবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিড়াকাটা হয়ে শালবনির ভাদুতলা বনাঞ্চল আধিকারিকের কার্যালয়ে শেষ হয় বাইক র‍্যালি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল চাঁদড়া রেঞ্জের বাগঘরা এলাকায় একটি পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মৃত্যু হয়েছিল এই শিকার উৎসব চলাকালীনই। তারপর থেকেই বনদপ্তর বন্যপ্রাণী হত্যার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে আদিবাসী সমাজের মোড়লদের নিয়ে একাধিকবার মিটিং করে বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধ করার জন্য আবেদন জানিয়ে চলেছেন। সেইসঙ্গে আছে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন এবং আদালতের নির্দেশ। বিশাল জঙ্গলের মধ্যে বন্যপ্রাণীরা ঘোরাফেরা করে। কিন্তু, এই শিকার উৎসবের সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে গিয়ে তাদের হত্যা করে বলে অভিযোগ। তাই এদিনের ব্যানারে বা পোস্টারে লেখা ছিল, “বন্যপ্রাণী হত্যা করবেন না।” তাছাড়াও, এই সময়ে জঙ্গলে আগুন না লাগানোর বার্তাও দেওয়া হয়েছে এদিনের এই বাইক র‍্যালি থেকে। বনকর্মীরা ডিউটির সময় যাতে কোনো রকম দুর্ব্যবহারের শিকার না হয় সেই আবেদনও জানানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির অরণ্য শাখার সভাপতি সঞ্জয় মাজি বলেন, “যাতে অস্ত্র ব্যবহার না করে রক্তহীন ভাবে শিকার উৎসব পালন করা হয় সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে মোড়লদের। এই নিয়ে একাধিকবার মিটিং করা হয়েছে মোড়লদের সাথে। যেহেতু ধার্মিক অনুষ্ঠান, তাই শিকার উৎসব বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাঁরা শিখার উৎসব পালন করুন। কিন্তু, কোনভাবেই বন্যপ্রাণী হত্যা করে নয়।”

thebengalpost.net
সরকারি কর্মচারীদের অরণ্য শাখার উদ্যোগ:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):