thebengalpost.in
ভোল বদলে যাওয়া "পরশ" :

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ আগস্ট: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী গ্রামীণ হাসপাতালের “পরশ” বিভাগ-টি সম্পূর্ণ নতুন সাজে, নতুন রূপে গড়ে তোলা হল। নতুন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (BMOH) ডাঃ মনোজিৎ বিশ্বাস দায়িত্ব নেওয়ার পর, জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা “পরশ” (PARASH) ভবন তথা বিভাগ-টি যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু, কি এই “পরশ”? গ্রামীণ এলাকায় অপুষ্টি জনিত কারণে ভোগা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ উদ্যোগে প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালে যে পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র (NRC- Nutrition Rehabilitation Centre) গড়ে তোলা হয়েছে, তারই নাম দেওয়া হয়েছে- “পরশ”। শালবনী গ্রামীণ হাসপাতালেও “পরশ” ছিল। কিন্তু, তা একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল। নতুন বিএমওএইচ সম্প্রতি দায়িত্ব নেওয়ার পর ভবনের সার্বিক শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। নতুন রং, কারুকার্য থেকে শুরু করে রান্নাঘর, বাথরুম সবকিছুরই সংস্কার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শারীরিক অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সার্বিক বিকাশের জন্য বিভিন্ন খেলনা, সাইকেল, টিভি এবং শিক্ষামূলক উপকরণ নিয়ে আসা হয়েছে।

thebengalpost.in
“পরশ” আগের :

thebengalpost.in
ভোল বদলে যাওয়া “পরশ” :

প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ প্রসূতি মায়েরা অপুষ্টিতে ভোগেন কিংবা অপরিণত বয়সেই প্রসব করেন। ফলে মায়েদের অপুষ্টি শিশু’দের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন কারণেই গ্রামীণ এলাকার অনেক শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। বয়সের তুলনায় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নেহাতই কম! ডাঃ মনোজিৎ বিশ্বাস বললেন, “এই ধরনের শিশুদের সংক্ষেপে SAM বলা হয়, অর্থাৎ Severe Acute Malnutrition বা চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এইসব শিশুদের আশা কর্মী অথবা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা চিহ্নিত করেন বিশেষ মানদণ্ডের নিরিখে। তারপর তাদের চিকিৎসা ও সার্বিক বিকাশের জন্য এই পরশে নিয়ে এসে রাখা হয় ২১ দিনের জন্য। শিশু’র সাথে তার মা-ও থাকেন। এর ফলে, ওই মা ভবিষ্যতেও শিশু’র সঠিক যত্ন ও পরিচর্যার বিষয়টি শিখে যান।” জঙ্গলমহল শালবনীর বুড়িশোল, পীরচক, জোড়কুশমা সহ বিভিন্ন দারিদ্র্য পীড়িত গ্রামে এই ধরনের প্রচুর শিশু রয়েছে। তাই, শালবনীর পরশ-কে নবরূপে সাজিয়ে তোলার উপর জোর দিয়েছিলেন নতুন বিএমওএইচ। তিনি জানালেন, “এই ভবনটিতে আগে জল পড়ত। ঘরগুলিও দীর্ঘকাল সংস্কার না হয়েই পড়েছিল। শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খেলনা ও উপকরণের অভাব ছিল। সেগুলি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ৭ জন শিশু ও তাদের মায়েরা আছেন পরশে।” তবে, শুধু “পরশ” বা গ্রামীণ হাসপাতাল-ই নয়, বিএমওএইচ তথা সুপার ডাঃ মনোজিৎ বিশ্বাসের উদ্যোগ ও তৎপরতায় শালবনী সুপার স্পেশালিটি তথা করোনা হাসপাতালের ভেতরেও বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য করা হয়েছে। রোগী সহায়তা কেন্দ্র থেকে সমস্ত জায়গায় সৌন্দর্যের ছোঁয়া! তৃতীয় ঢেউয়ের কথা ভেবে নিকু (NICU) ও পিকু (PICU)- বিভাগ গড়ে তোলার কাজও প্রায় শেষের পথে বলে জানিয়েছেন ডাঃ বিশ্বাস। এসব কিছুর জন্য অবশ্য তিনি কৃতিত্বের দাবি করলেন না! তিনি বললেন, “আমাদের জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। এজন্য, আমাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং শালবনী পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসানের সাহায্যও প্রতিমুহূর্তে পাচ্ছি।”

thebengalpost.in
পরশের ভেতরে :

thebengalpost.in
শিশু ও তাদের মায়েরা :

thebengalpost.in
নতুনরূপে করোনা হাসপাতালের রোগী সহায়তা কেন্দ্র :