দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ অক্টোবর: “কোনও নেতা-মন্ত্রীর নামে নয়, রাস্তাঘাট-সরকারি ভবনের নাম রাখা হোক দেশরক্ষা করতে গিয়ে বলিদান দেওয়া অমর শহীদদের নামে”, খড়্গপুরে দাঁড়িয়ে নিজের অরাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বার্তা দিলেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় (ওরফে হিরণ)। প্রসঙ্গত, খড়্গপুর সদরের বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শনিবার শুরু হয়েছে দু’দিনের “অমর জওয়ান কাপ”। তবে, বিজেপির ব্যানারে নয়, অরাজনৈতিক ‘বজরং শ্রী রামনবমী উৎসব সেবা সমিতি’র ব্যানারে এই ফুটবল প্রতিযোগিতার (২৩ ও ২৪ অক্টোবর) আয়োজন করেছেন হিরণ! উদ্দেশ্য মহৎ, শহীদ পরিবারগুলিকে শ্রদ্ধা জানানো। তবে, পিছু ছাড়ছেনা বিতর্ক! এনিয়ে পরপর দু’টি কর্মসূচি (বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদও করেছিলেন দলীয় ব্যানার ছাড়া) দলের ঝান্ডার তলায় নয়, স্থানীয় ক্লাব ও মানুষদেরকে নিয়েই করলেন হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। এদিনের ফুটবল প্রতিযোগিতাতে দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ মণ্ডল সভাপতিদেরও! অন্যদিকে, তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, ডি.এম, এস.পি থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার, জওহর পাল, দেবাশীষ চৌধুরী, রবিশঙ্কর পাণ্ডেদের। যদিও, তাঁরা উপস্থিত হননি, প্রদীপ সরকার ফোনও ধরেননি! তা সত্ত্বেও হিরণ-কে নিয়ে জল্পনা কিছুতেই থামছেনা! তবে, জল্পনা উড়িয়ে হিরণ জবাব দিয়েছেন, “সবকিছুতেই রাজনীতিকে টানতে হবে কেন! আমি মনে করি, রাজনীতির ঊর্ধ্বে মানুষ।‌ সাধারণ মানুষ হিসেবেও আমাদের কিছু সামাজিক ও সাংবিধানিক দায়-দায়িত্ব, কর্তব্য আছে। আর, সেখানে তৃণমূল-বিজেপি আমি দেখতে চাইনা!”

thebengalpost.net
হিরণের উদ্যোগে ‘অমর জওয়ান কাপ’ :

উল্লেখ্য যে, দিনকয়েক আগে হিরণ বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদও করেছিলেন দলীয় ব্যানার ছাড়া। বৃহস্পতিবারই তিনি উন্নয়নের প্রশ্নে খড়্গপুরের রেল কর্তৃপক্ষ-কে একহাত নিয়েছেন। যে রেলের প্রশংসায় সর্বদা পঞ্চমুখ থাকতে দেখা গেছে সাংসদ দিলীপ ঘোষকে, সেই রেলের কাজকর্ম নিয়েই ফের একবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হিরণ! এতদিন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ও পৌর প্রশাসক প্রদীপ সরকার-কে বলতে শোনা গেছে, খড়্গপুরকে ডুবিয়ে ছাড়ছে রেল, এবার প্রায় একই সুরে হিরণ-কেও বলতে শোনা গেছে, খড়্গপুর শহরের জন্য অনেক কিছু করতে পারে রেল, কিন্তু তা করেননি এখানকার আধিকারিকরা। তবে, প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রীর কোনও সমালোচনা করেননি হিরণ! বরং তাঁদের প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, এখনও ক্যাম্পাস না খোলায় বা পড়ুয়াদের খাওয়া-দাওয়া-থাকা নিয়ে উদাসীন থাকায় আইআইটি কর্তৃপক্ষেরও কড়া সমালোচনা করেছেন হিরণ। বিশেষত তাঁর ফোন না ধরায় আইআইটি অধিকর্তা (Director of IIT Kharagpur) কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন হিরণ! তবে, এই বিষয়ে রেল ও আইআইটি’র তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, শনিবার ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনে গিয়ে হিরণ আরও দু’টি প্রস্তাব রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র কাছে। তিনি জানিয়েছেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি লিখে তিনটি প্রস্তাব রেখেছি। এখন থেকে যেন রাস্তাঘাট-সরকারি ভবন শহীদদের নামে করা হয়। স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের পতাকা উত্তোলনে অবশ্যই যেন সেই এলাকার শহীদ পরিবারদের ডাকা হয়। সর্বোপরি, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে যেন ‘তিরঙ্গা পরিবার’ উপাধি দেওয়া হয়!” হিরণ বলেন, “যেভাবে ডাক্তারদের বাড়ির নেমপ্লেটে ডঃ লেখা হয়, উকিলদের বাড়ির নেমপ্লেটে অ্যাডভোকেট লেখা হয়, মন্ত্রীদের বাড়ির নেমপ্লেটে মন্ত্রী লেখা হয়, ঠিক সেভাবেই শহীদ জওয়ানদের বাড়ির সামনেও তিরঙ্গা পরিবার লেখা হোক। এই প্রস্তাব আমি দিয়েছি প্রধানমন্ত্রী-কে চিঠি লিখে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি আমার চিঠির উত্তর আসবে।”